আগৈলঝাড়া বরিশাল প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধার বসত ঘরের তালা ভেঙ্গে রাতের আধারে দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মনিকা সরকার ঘরে ঢুকতে না পেরে তিন দিন ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
এঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ সরেজমিন পরিদর্শণ করেছে। দখলকারীরা জায়গাসহ ঘর নিজেদের বলে দাবী করেছে। স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরা তিনি এক বছর পূর্বে মারা যান।
মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরার উত্তোলনকৃত ঘরে তার ভাই সমীর হাজরা ছেলে—মেয়ে নিয়ে এক সাথে একই ঘরে বসবাস করে আসছিলো। বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পরেও তার স্ত্রী মনিকা সরকার একই ঘরে বসবাস করে আসছিলো। কিছুদিন পূর্বে মনিকা সরকারের বড় বোন তার কাছে বেড়াতে আসলে অসুস্থ হয়ে পরলে মনিকার কক্ষে তালা দিয়ে বোনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যায়।
এই সুযোগে সমীর হাজরা ও তার ছেলে সুব্রত হাজরার নেতৃত্বে গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে ঘরের তালা ভেঙ্গে মনিকার কক্ষ দখল করে নিয়ে প্রতিপক্ষরা ভিতর থেকে তালা বদ্ধ রেখেছে। মনিকা এই সংবাদ শুনে ঢাকা থেকে বাড়ি এসে তার কক্ষে ঢুকতে চাইলে দেবর সমীর হাজরা, মেয়ে লিপি হাজরা ও ছেলে সুব্রত হাজরাসহ তাদের পরিবারের লোকজন তাকে বাধা দেয়।
ঘরে ঢুকতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরার স্ত্রী মনিকা সরকার তিনদিন ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এবিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরার ভাই সমীর হাজরা বলেন, আমার ভাইর মৃত্যুর পূর্বে ঘরের জায়গাসহ ৫টি দাগের ২৬ শতাংশ জায়গা আমার ছেলে সুব্রত হাজরার নামে দানপত্র দলিল করে দিয়েছে।
আমাদের টাকায় পাকা ঘর উত্তোলন করার সময় তারাও কিছু টাকা দিয়েছিল। আমরা তাই ঘরের তালা ভেঙ্গে দখল করে নিয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরার স্ত্রী মনিকা সরকার স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের জানিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে মনিকা সরকার গতকাল সোমবার সকালে আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য কমল বিশ্বাস, ৭০ বছরের বৃদ্ধা হাসি হাজরাসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন ওই ঘরের মালিক মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরা। তার মৃত্যুর পর থেকে তার স্ত্রী মনিকা সরকার বসবাস করে আসছে। মুক্তিযোদ্ধা ফ্রান্সিস বিনয় হাজরার স্ত্রী মনিকা সরকার বলেন, আমি আমার অসুস্থ বোনকে নিয়ে চিকিৎসা জন্য ঢাকায় যাই।
আমি যাবার সময় ঘরের আলমীরায় আমার ও বোনের পাঁচ ভরী স্বর্নালঙ্কার, একটি আইফোন মোবাইল, নগদ ৫০ হাজারা টাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জামাকাপড় রেখে যাই। আমি ঢাকা থেকে এসে দেখি আমার ঘর দখল হয়ে গেছে।
আমার জিনিসপত্র কি অবস্থা আছে তাও দেখতে পাইনি। এঘটনায় থানার ওসি (তদন্ত) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে জায়গার কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেছি।
