বরিশালের উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামে ঘের নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে গভীর রাতের তাণ্ডব চালিয়ে ছয়টি পানির সেচ পাম্প, ট্রলারে সংযোগ, মুরগির খামারে পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন,কয়েক হাজার মিটার প্লাস্টিকের পাইপ ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর সহ কোটি তাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা আসাদ হাওলাদার ও তার ভাই বিএনপি নেতা ইলিয়াস ও কিবরিয়ার নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল ১৭ আগস্ট রাত ৩ টার দিকে রুবেল বালি,
ইদ্রিস হাওলাদার ও মাহফুজ বালীর মাছ ও মুরগির প্রজেক্টে তাণ্ডব চালিয়ে ছয়টি সেচ পাম্প ও একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার , পাইপ, টিউবওয়েল সহ প্রায় কোটি তাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় ভাড়াটি সন্ত্রাসীরা মাইক্রবাস যোগে পালানোর সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে বাসটিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে । ঘের মালিক রুবেল বালি জানান,
পশ্চিম সাতলা মৌজা হইতে পাকা রাস্তা পর্যন্ত স্থানীয় জনগণ ও খামার মালিকদের মুরগি ও মাছের খাদ্য আনার জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয় গত এক মাস যাবত এতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বাধা প্রদান করেন ।এরই ধারাবাহিকতায় গত কাল গভীর রাতে আসাদ , ইলিয়াস , কিবরিয়া, রাসেল,
জুয়েল, সোহেল, মশিউর বালী, রায়হান, শামীম সহ ৪০-৫০ জনের সশস্ত্র একদল সন্ত্রাসী ট্রলার যোগে আমার প্রজেক্টে ঢুকে আমার খামারের গুদাম লুট করে মাছ ও মুরগির খাবার নিয়ে যায়। সেচ পাম্পের পাইপ কুপিয়ে খণ্ড বিখণ্ড করে প্রায় কোটি তাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে।
এ বিষয়ে সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খাইরুল বাসার লিটন মিয়া জানান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে শুধু ঘেরটি দখলে রাখার উদ্দেশ্যে জনস্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত রাস্তাটি না হওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। একই সাথে তার ইন্ধনে সন্ত্রাসী আসাদ বাহিনী দিয়ে রাতে এই তাণ্ডব ঘটিয়েছেন।
এই বাহিনীর অত্যাচার থেকে হিন্দুরা ও রক্ষা পায়নি। উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মো. ফয়জুল হক বালী ফারাহীন বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাওলাদার অবৈধভাবে ঘেরটি দখল করার উদ্দেশ্যে জনস্বার্থে নিজ জমিতে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত রাস্তাটি বন্ধ করার অপচেষ্টা করছেন।
যাতে রাস্তাটি হতে না পারে সে কারণে রাতে তাণ্ডব চালিয়ে সেচ পাম্প ও পাইপে অগ্নিসংযোগ করেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন বালী জানান শাহিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী আসাদ ও তার ভাই বিএনপি নেতা ইলিয়াস সহ একটি সন্ত্রাসী দল এলাকায় মূর্তিমান আতঙ্ক ।এই হামলার কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
রাতের তাণ্ডবের বিষয় অভিযুক্ত মোঃ আসাদ হালদার কে বারবার ফোন দিলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহীনের হাওলাদার সাংবাদিকদের কে বলেন অগ্নি সংযোগ ও তাণ্ডবের বিষয়ে আমি জড়িত না।
মূল বিষয় হলো ঘেরটি জোর দখল করে বিগত বছর গুলোতে কৃষকদের ঠকিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, পরে কৃষকদের নিয়ে ঘেরটি আমরা গত বছর মাছ চাষ শুরু করলে কৃষকরা লাভবান হয়। এতে সভাপতি মহোদয়ের গ্রুপ ঈর্ষান্বিত হয়ে ঘেরের মাঝ থেকে পরিকল্পিতভাবে রাস্তার নাম করে ঘের দখলের চেষ্টা চালাচ্ছ।
গভীর রাতের তাণ্ডবের বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জাফর আহম্মেদ বলেন, আমি ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেছি , আলামত হিসেবে একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে । এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি , অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।