বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারের তিন দফা দাবির আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কি বিনা কারণে সরকারের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করতে চাই, নাকি এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অন্য ধরনের ফায়দা লুটতে চাই?’ এ সুযোগ আমরা দিতে চাই না। আমরা তাদের প্রতি সহনীয় এবং সীমাবদ্ধভাবে সহনীয় থাকার চেষ্টা করছি।’
বুধবার দুপুর দেড়টায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মনে করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনভোগান্তি হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে তারা ব্যবস্থা নেবে। আন্দোলনকারীদের চাওয়া-পাওয়া এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোনও বিরোধ নেই।’
এ সময় মহাপরিচালক আন্দোলনকারীদের সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন। এরপর মহাপরিচালক কঠোর ভাষায় বলেন, ‘এরপরও আপনারা দূরত্ব সৃষ্টি করতে চাইলে তাহলে আমাদের ভেবে দেখতে হবে, আসলে আপনারা কী চান।’ এরপর আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কি কি কাজ হয়েছে তার ফিরিস্তি তুলে ধরেন মহাপরিচালক।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ‘যেসব দাবি উত্থাপন করা হয়েছে তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি ন্যায্য মনে হয়েছে। এই জন্য ন্যায্য মনে করেছি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংস্কার কমিশনের যে সুপারিশমালা সেই সুপারিশমালার মধ্যে আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো রয়েছে। তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও দূরত্ব হওয়ার কথা নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো তাদের প্রতিপক্ষ নয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনেক কাজ করেছে, আরও কাজ চলমান রয়েছে। জনবল সমস্যা প্রকট।’ তিনি বলেন, ‘যেকোনও পরিবর্তনের জন্য সুযোগ দরকার। সবচেয়ে বেশি দরকার সর্বস্তরের সহযোগিতা। বিশেষ করে যারা হাসপাতালে এসে এ সেবা ভোগ করবেন তাদের সচেতনতা এবং সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন।’ হাসপাতালের সংস্কারের বিষয়ে বলেন, ‘কিছু কিছু সংস্কার অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব। আবার কিছু কিছু সংস্কার রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী।
এ কারণে সব সংস্কার একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। আমরা আশা করবো, এর বীজ বপন হয়েছে গাছপালা হয়েছে। কিন্তু এর লালন পালনের দায়িত্ব পরিবর্তী যে রাজনৈতিক সরকার দেশ পরিচালনা করবে তাদের ওপর।’ এদিকে মতবিনিময় সভা চলাকালে হাসপাতালে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয় মহাপরিচালকের কাছে।
মহাপরিচালকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের পরিচালক ছিলেন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ ছায়েদুল হকসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। এরআগে হাসপাতালের প্রধান গেটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবির সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম মহাপরিচালকের কাছে তুলে ধরেন। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে আসার অনুরোধ জানান।