বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৭৩ স্টাফের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাতে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় মো. সফিউল্লাহ নামে এক ব্যক্তি অভিযোগটি দাখিল করেন। এতে ২৩ জন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। এরআগে গত ১৪ আগস্ট নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে হাসপাতালের স্টাফদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে গত রবিবার অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং একজন চিকিৎসক ও দুজন কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠে।
এ অভিযোগে হাসপাতালে কর্মচারী বাহাদুর স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মহিউদ্দিন রনিসহ ৮১ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাধারণ ছাত্র-জনতা গত ২৮ জুলাই থেকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় বাদীসহ সাক্ষীরা ১১ আগস্ট থেকে মেডিকেলের মধ্য গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসে। ঘটনার দিন ১৪ আগস্ট সকাল ১০টায় আসামিরা অনশনকারীদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ এনে পুলিশের উপস্থিতিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় এবং বেধরক মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র রামদা, বগিদা, চাপাতি, রড, লাঠিসোঁটা ব্যবহার করেন।
এ হামলার সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে থাকা মোবাইল, মানিব্যাগ, আইডিকার্ডসহ মূল্যবান মালামাল লুট করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি হামলায় গুরুতর আহত হলেও সরকারি কোনো হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন মাধ্যমে গুম-খুনের হুমকি দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন প্রকার গুজব ও হয়রানিমূলক তথ্য ছড়াতে থাকে হামলাকারীরা।
এ বিষয়ে ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা পেয়ে পরবর্তী সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, হয়রানি ও ভোগান্তির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া সব হামলা, মিথ্যা মামলা এবং গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার টাউনহলে এসে শেষ হয়।