পটুয়াখালীর বাউফলে নামধারী ডাক্তারের অপচিকিৎসায় ফাতেমা বেগম (৬০) নামের এক নারীর ২টি চোখ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ পাওয়াগেছে। অভিযুক্ত ওই ডাক্তারের নাম মো কাজি মাসুদ রানা (৩৬)। সে পেশায় একজন পল্লি চিকিৎসক।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ফাতেমা বেগমের নাকের ভিতর একটি ছোট টিউমার নিয়ে গ্রাম ডাক্তার মাসুদের কাছে গেলে তিনি পলিপাস বলে রোগীকে জানান। চিকিৎসার জন্য প্রথমে ১২হাজার টাকা দাবি করেন। পরে কমিয়ে ৭হাজার টাকায় চুক্তি হয় ওই ডাক্তারের সাথে। ৩১ জুলাই রোগীর পলিপাসের চিকিৎসা দেন কাজি মাসুদ রানা। একদিন পর রোগী অসুস্থ বোধ করলে ২আগষ্ট রোগীকে নিয়ে আবার ওই ডাক্তারের কাছে যান। ওই দিন তার নাকের পলিপাসটি অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলেন তিনি। এসময় তার নাকের ভিতর দিয়ে ব্যপক রক্তক্ষরণ হতে থাকে। অপারেশনের পর ওই নরীর চোখে সমস্যা দেখা দেয়। পরের দিন আবার মাসুদের কাছে গেলে তিনি চোখের ডাক্তার দেখাতে বলেন। ফলে আবার তারা চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাওয়ার পরামর্শ দেন। রোগীকে নিয়ে তার পরিবার ঢাকাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের কাছে যান।
রোগীর স্বামী আবদুস সালাম বলেন, প্রায় ১৫ দিন চিকিৎসার পর ওই ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করেন। ঢাকায় তাদের পরিক্ষা-নিরিক্ষা শেষে ডাক্তাররা জানন রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের ফলে ক্ষতস্থান ও উভয় চোখেই ক্যান্সার দেখা দিয়েছে। বর্তমানে ওই নারী মৃত্যুশয্যায়।
মাসুদ নিজেকে ‘ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল এসিস্টেন্ট’ (ডিএমএ) দাবি করলেও তার সাইনবোর্ডে গ্রাম ডাক্তার লেখা রয়েছে। তার ব্যবহৃত ভিজিটিং কার্ডে গ্রাম ডাক্তার সমিতির সভাপতি লেখা রয়েছে। যার রেজি- নং ঢ ০২৪৫৪ উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পল্লি চিকিৎসক কাজি মাসুদ রানা ওই নারীকে চিকিৎসার কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি ওই নারীকে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে নাকের পলিপাস অপসারন করেছেন। তিনি গ্রাম ডাক্তার হয়েও হোমিও চিকিৎসা কিভাবে দিচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেখতে দেখতে শিখেছেন। হোমিও চিকিৎসার কোন সনদ তার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নেই।
তিনি হোমিও চিকিৎসা দিয়েছেন মুখে বললেও পেসক্রিপশন দিয়েছেন এলোপ্যাথিক এন্টিবায়টিকসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা।
চিকিৎসায় ব্যবহার করেছেন ‘এসিড নাইট ম্যথার’ নামক একটি মেডিসিন। এই মেডিসিনের বিষয় হোমিও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা : আনিছুর রহমান বলেন, এই মেডিসিন আমি ব্যবহার করি না। কেন ব্যবহার করা হয় আমি জানি না।
এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মো: খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, সে কোনভাবে ওই চিকিৎসা দিতে পারে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।