More

    যশোরে নিজের শিশুকন্যাকে হত্যার পর বিবস্ত্র করে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন বাবা

    অবশ্যই পরুন

    যশোরের মনিরামপুরের রোহিতায় সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের পুকুর থেকে মাহমুদা সিদ্দিকা (১৩) নামে এক কিশোরীর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধারের মূল রহস্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিশোরীর বাবা মাওলানা আয়নুল হক নিজেই মেয়েকে দোকান থেকে রুটি চুরি করে খাওয়ার অপরাধে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আদালতে মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আয়নুল হক।

    মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, হত্যার দায়ে কিশোরী মাহমুদার বাবা আয়নুল হককে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আদালতে হাজির করা হয়। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাড়ির পাশের দোকান থেকে রুটি চুরির অভিযোগ পেয়ে আয়নুল হক ওইদিন বিকালে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েকে মারপিট করেন।

    এক পর্যায়ে তিনি তার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পুকুর পাড়ে ঝোপের মধ্যে রেখে দেন। পরে এশার নামাজের পর নিজেই পুকুরে লাশ ফেলে দেন। ওসি আরও বলেন, আয়নুল হক স্বীকার করেছেন যে, তিনি লাশের পা ধরে পুকুরের পানিতে নিক্ষেপ করার সময় মেয়ের পরনের পায়জামা খুলে তার হাতে থেকে যায়।

    পরে সেই পায়জামা ও মেয়ের ওড়না পুকুরে ফেলে দেন আয়নুল হক। এদিকে, মাদ্রাসাছাত্রী মাহমুদার লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তাকে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার কথা উল্লেখ থাকায় গত ১২ সেপ্টেম্বর কিশোরীর মা শাহিনুর আক্তার বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

    তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, মাহমুদাকে ধর্ষণ করা হয়নি। মামলা থেকে ধর্ষণের ধারা বাদ যাবে। এদিকে, মাদ্রাসাছাত্রী মাহমুদার বিবস্ত্র লাশ রোহিতা বাজারের পাশের পুকুর থেকে উদ্ধারের পর থানা পুলিশ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

    স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, গত ৩-৪ দিন ধরে মেয়েটির বাবা আয়নুল হক পলাতক ছিলেন। এতে করে পুলিশের সন্দেহ বাড়তে থাকে। আয়নুল হককে হাজির করতে পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে বাদীকে থানায় নিয়ে যায়। পরে স্বামীকে হাজির করার শর্তে পুলিশ বাদীকে ছেড়ে দেয়। বাদী শাহিনুর আক্তার বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে স্বামীকে বাড়িতে ডেকে আনেন। এরপর স্বামীকে নিয়ে তিনি বিকালে থানায় গেলে পুলিশ আয়নুল হককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আয়নুল নিজেই মেয়েকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন।

    পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আদালতে হাজির করে। জানা যায়, উপজেলার রোহিতা বাজার এলাকায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ৭-৮ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন মাওলানা আইনুল হক। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করে সংসার চালাতেন। হত্যার শিকার মাহমুদা আয়নুল হক ও শাহিনুর দম্পতির মেজ মেয়ে। সে স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসার ৭ম শ্রণির ছাত্রী ছিল।

    গত ৮ সেপ্টেম্বর মাদরাসা থেকে ফেরার পথে বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে রুটি চুরি করে মাহমুদা। দোকানদার ঘটনা টের পেয়ে কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে জানায়। তখন মেয়েটিকে তার মা দোকানে এসে লোকজনের সামনে জুতা পেটা করেন। পরে বাড়িতে যাওয়ার পর মাহমুদাকে তার বাবা মারপিট করেন।

    একপর্যায়ে বাবা আয়নুল হক মেয়ের গলা টিপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যায় মাহমুদা। পরে তার বাবা আয়নুল হক বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে মেয়ের লাশ পুকুরে ফেলে দেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১০টার দিকে স্থানীয়রা পুকুর থেকে কিশোরীর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    মঠবাড়িয়ায় মৌসুমি মামলার হিরিক বাড়ি ছাড়া ৬ সাংবাদিক নিন্দার ঝড়!

    মোঃ রোকনুজ্জামান শরীফ , মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় রাজনৈতিক মামলার হিরিকে রেহাই না পেয়ে বাড়ি ছেড়েছেন ছয় সাংবাদিক।ছয়জন সাংবাদিককে...