বরিশাল নগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ডিসি লেকের চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ বন্ধের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সর্বস্তরের নাগরিকেরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। সকাল ১০টায় এ স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্মারকলিপি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী, বাম গণতান্ত্রিক জোট বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক শাহ আজিজ খোকন, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জলিলুর রহমান, সিনিয়র সিটিজেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, কড়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক সোনালী কর্মকার প্রমুখ। বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী বলেন, বরিশাল নগরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই লেক নগরবাসীর একমাত্র উন্মুক্ত জলাশয়।
এখানে প্রাচীর নির্মাণ মানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করা। প্রশাসন নিরাপত্তাহীনতা ও অসামাজিক কার্যকলাপের অজুহাতে প্রাচীর নির্মাণ করছে। অথচ সমাধান হতে পারে পুলিশি টহল, সিসিটিভি ক্যামেরা বা পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। লেক ও পার্ক এলাকায় মানুষ পরিবার নিয়ে সময় কাটায়। সেই সুযোগ কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। অবিলম্বে প্রাচীর নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে হবে।
না হলে নাগরিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সিনিয়র সিটিজেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, নগরায়ণ ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে বরিশাল শহরের অনেক খাল-জলাশয় হারিয়ে গেছে।
বরিশালের ঐতিহ্য এই ডিসি লেক এখন নগরবাসীর শেষ ভরসা। সেটিও নিরাপত্তার অজুহাতে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ হতাশা ও দুঃখজনক। প্রাচীর নির্মাণ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, কিছু তরুণ-তরুণী লেকের পাশে গভীর রাত পর্যন্ত সময় কাটানোর নামে অসামাজিক কার্যকলাপ করেন। পাশের সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
তা ছাড়া এখানে মাদকসেবীদের আড্ডা এবং লেক থেকে মাছ চুরিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এগুলো বন্ধ করার জন্য লেক ঘিরে প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ লেকের পাশে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে প্রাচীর নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন।