ইংল্যান্ড নারী দল এই বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট। সেই দলের বিপক্ষে নিগার সুলতানা জ্যোতিরা দারুণ লড়াই করেছেন। জিততে জিততে ম্যাচটা হেরে গেছেন তারা। ম্যাচের সেরা বোলার লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন মনে করেন শেষ রান পর্যন্ত ম্যাচে ছিলেন তারা, ‘৬টি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ইংল্যান্ডের ডিন নেমে খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। আমি তাকে কৃতিত্ব দেব। ওখান থেক আমরা বেশ কিছু স্কোরিং বল ওদেরকে দিয়েছি। যেটা ওরা বাউন্ডারিতে রূপ দিয়েছে। ১৬ রান বাকি থাকতেও আমি অধিনায়ককে বলেছিলাম এখনও চারটি মিরাকল বল হলে ম্যাচ জিততে পারি। আমরা চারটা ভালো বল করতে পারলে ম্যাচটা জিতে যেতাম। চারটি উইকেট টেকিং ডেরিভারি দিতে হতো। সেটা না হলে আমি মনে করি শেষ রান পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম।’
এই ম্যাচে আম্পায়ারের একটি ভুল সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে ছিটকে দিয়েছে। ইংলিশ টপঅর্ডার ব্যাটার হেইথার নাইট ১৩ রানে ফিরতি ক্যাচ হয়েছিলেন ফাহিমার হাতে। ব্যাটার আউট মনে নিয়ে মাঠ ছাড়ছিলেন। অথচ তৃতীয় আম্পায়ার তাকে আউট দেয়নি। ম্যাচ শেষে নাইট স্বীকারও করেন আউট ছিলেন তিনি। ফাহিমা মনে করেন আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে, ‘আমরা মনে করি এটা খুবই দুঃখজনক। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে ওটা আউট ছিল। আমরা সেভাবেই আপিল করেছিলাম। আউট হওয়ার পরেও যখন দেওয়া হয়নি তখন আমরা একটু আপসেট ছিলাম। ওই উইকেটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল ওই সময়ে। উইকেটটা গেলে হয়তোবা ম্যাচের সিনারিও ভিন্ন হতো।’
ফাহিমা জানান দলগতভাবে ৩০ রান কম করেছেন তারা। ২০০ প্লাস করা সম্ভব হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি হতো বলে দাবি তার, ‘আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খুব ভালো শুরু করেছি। জয় দিয়ে শুরু করেছি। সেদিক থেকে আমরা খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আজকে (গতকাল) আমরা ২০ থেকে ৩০ রান কম করেছি। আমরা এই ছন্দটা ধরে রাখতে পারলে কোনো দল আমাদের হালকাভাবে নেবে না।
নারী দল বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার পেয়েছে। বোলিং বৈচিত্রে ঠাসা দল। যে কারণে বোলিং দিয়ে জেতার চেষ্টা ছিল বলে জানান ফাহিমা, ‘আমাদের বোলারদের পরিকল্পনা ছিল উইকেট টু উইকেট বল করা। আমরা চেষ্টা কিরেছি। আমাদের যে বোলিং আক্রমণ সেদিক থেকে খুব ভালো স্কোর আমরা দাঁড় করিয়েছিলাম। আমাদের এই বর্তা দেওয়া হয়েছে তোমরা উইেকট টু উইকেট বল কর, বাইরে করো না। কারণ আমার মনে হয় ইংল্যান্ডের সব ব্যাটাররাই সাইড শট খেলতে পছন্দ করে। সেদিক থেকে ওরা স্কোরিং শট বেশি পাওয়াতে আমরা একটু চাপে পড়েছি। আরেকটু নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলে ভালো কিছু হতে পারত।’
হারলেও ইংলিশদের বিপক্ষে লড়াই করে সমর্থকদের হৃদয় জিতে নিয়েছেন জ্যোতিরা। এই ম্যাচে দুজন ক্রিকেটার নিজেদের বাকিদের থেকে আলাদা করেছেন। ব্যাট হাতে রাবেয়া খান। ২৭ বলে ৪৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। বোলিংয়ে ফাহিমা ছিলেন সেরা। ১০ ওভার শেষ করেছেন ১৬ রান দিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
রাবেয়ার ব্যাটিংয়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ফাহিমা, ‘আমি বলব অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। আমি অবশ্যই ওকে কৃতিত্ব দেব। কারণ যেটা আমার করার কথা ছিল, দায়িত্বটা আমার ছিল। ওখান থেকে আমি রিতু মনি যদি ওই ক্যামিওটা খেলতে পারতাম তাহলে স্কোর বড় হতো। আমি যখন নেমেছিলাম চিন্তা ছিল দলকে ২০০ রানের বেশিতে নিয়ে যাব। সেখান থেকে আমরা করতে পারিনি। লোয়ার অর্ডারে নেমে সে (রাবেয়া) যে এত সুন্দর একটা ব্যাটিং করেছে, পরের ম্যাচে আমাদের খুবই উজ্জীবিত করবে।’