More

    বরিশালের বহুল আলোচিত দুটি হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন হয়নি

    অবশ্যই পরুন

    রাহাদ সুমন, বরিশাল:  বহুল আলোচিত দুইটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। এরমধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুন রাঢ়ী বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের উত্তর মোড়াকাঠী গ্রামের আব্দুস সালাম রাঢ়ীর ছেলে।

    সে গৌরনদীর বাটাজোর বন্দর থেকে নিজের ইজিবাইকসহ নিখোঁজ হয়েছিলেন। অপর হত্যাকাণ্ডের শিকার পয়ত্রিশোধর্র্ব অজ্ঞাতনামা যুবকের পরিচয় গত ১৫ মাসেও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

    হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুনের বড় ভাই সোহেল রানা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর বন্দর থেকে নিজের ইজিবাইকসহ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় মামুন রাঢ়ী। নিখোঁজের সাতদিন পর (২৬ আগস্ট) সকালে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী গৌরনদীর বার্থী বাজার সংলগ্ন খালের মধ্যে ভেসে ওঠে মামুনের মুখ থেতলানো গলাকাটা ক্ষতবিক্ষত লাশ।

    এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহতের বাবা আব্দুস সালাম রাঢ়ী বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহতের অপর ভাই মাসুদ রাঢ়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুরুতেই গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ হত্যার কোন ক্লু-উদ্‌ঘাটন করতে না পারায় বাদি মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন।

    আদালতের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েকদফা সিআইডির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলসহ নিহতের নিজ গ্রাম পরিদর্শন করে সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলেছেন।

    তবে ঘটনার পাঁচ বছরেও অদ্যবর্ধি হত্যাকাণ্ডের কোন ক্লু-উদ্‌ঘাটন কিংবা নিহতের ব্যবহৃত ইজিবাইক উদ্ধার করতে পারেননি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন নিহত মামুনের বৃদ্ধা মা রাশিদা বেগম।

    অপরদিকে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই সকাল নয়টার দিকে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের গোলাম নবী হাওলাদারের পাট ক্ষেত থেকে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সের অজ্ঞাতনামা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

    মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাশের গায়ে নেভি ব্লু রঙের একটি টি-শার্ট ও পরনে জলপাই রঙের একটি গ্যাভাডিং প্যান্ট ছিলো। নিহতের গায়ের রং কালো, উচ্চতা ৫ ফুট, কোঁকড়ানো দাঁড়ি, মোচ ও চুল। মরদেহটি ফুলে শরীরের বিভিন্নস্থানে ফোসকা ও পচন ধরেছিলো। লাশের দুই পায়ের হাঁটুর নিচে গোড়ালির উপরে মাংসপেশি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে।

    তৎকালীন সময় পুলিশের ধারণা ছিলো কোন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ২০২৪ সালের ১৭ থেকে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ওই যুবককে হত্যা করে লাশ গুমের জন্য ওই পাট ক্ষেতে ফেলে রেখে গিয়েছে। মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের চৌকিদার মাহবুব মৃধা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে লাশ উদ্ধারের দিন রাতেই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

    অজ্ঞাতনামা ওই লাশের মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এসআই নজরুল ইসলাম আরও জানিয়েছেন, নিহতের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। ঘটনার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় মেলেনি। যেকারণে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হচ্ছেনা।

    স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, আলোচিত হত্যাকাণ্ডগুলোর কোন রহস্য উদ্‌ঘাটন না হওয়ার কারণে বরাবরেই হত্যাকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণেই অপরাধ কর্মকাণ্ডগুলো থামানো যাচ্ছেনা।

    তারা আরও বলেন-আলোচিত এসব হত্যার ঘটনায় প্রত্যেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের আন্তরিকভাবে গভীর পর্যালোচনা করে দ্রুত হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনসহ আসামিদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা গেলেই অপরাধ কর্মকাণ্ড কমে আসবে।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    ১৯ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে দিলেন রিশাদ

    বল হাতে তিনি ভরসার নাম। তবে ব্যাট হাতেও যে বড় শট খেলার দক্ষতা আছে তার, সেটা আগেই জানা হয়ে...