বরিশাল জেলা উপজেলার বিভিন্ন মাছের বাজারে আসতে শুরু করেছে রুপালি ইলিশ। নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ বেচাকেনায় বাজারগুলো সরগরম হয়ে উঠলেও দামে যেন আগুন। হাতই দেওয়া যাচ্ছে না। এতে হতাশ হচ্ছেন ক্রেতারা।
মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেঘনা তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ কম পাওয়ায় বেশি দামে তাদের মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ইলিশের আমদানি বাড়লে দাম অনেকটাই কমে যাবে বলে তারা আশা করছেন। সোমবার ভোরে পোর্ট রোড বাজার, নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ বাজার ঘুরে সরেজমিন দেখা গেছে, ইলিশ আহরণ ও বেচাকেনাকে ঘিরে মাছের বাজারে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তুলনামূলক বড় ইলিশ পাওয়া না গেলেও ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশে সয়লাব বাজার। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত পোর্ট রোড মাছ বাজার সবচেয়ে বড় ইলিশ বেচাকেনার স্থান।
মাছ ব্যবসায়ী মারুফ আকন বলেন, ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি (২০০ গ্রাম ওজন) বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। ৮০০ থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে। নতুন বাজারে ইলিশ মাছ কিনতে আসা বাতেন শেখ বলেন, নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিলেই হবে না, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। এর মাধ্যমে ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
নিষেধাজ্ঞার আগে এক কেজি ওজনের ইলিশ দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কিনলেও এখন সেই একই ওজনের মাছ দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। জেলে আবুল কালাম বলেন, নদীতে ইলিশের সাইজ ছোট। তাই কীর্তনখোলা নদীতে নৌকা নিয়ে বেশি সময় কাটালাম। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাইনি। তিন হালি ইলিশ পেয়েছি যা মাঝারি আকারের।
এই মাছ বিক্রি করে নৌকার তেল খরচ উঠাতে কষ্ট হয়ে যাবে। মাছ বাজারের আড়তদার মনির পালোয়ান বলেন, ইলিশের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিতে নদী খননের পরামর্শ রইল। নদীতে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধেও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। তাহলে সাগরের ইলিশ নদীতে আসবে। তখন ইলিশের আমদানি বাড়বে এবং দাম কমবে। ইলিশ বিক্রেতা শাহজালাল বলেন, ইলিশের কিছু অর্ডার পেয়েছিলাম। নিষেধাজ্ঞার কারণে দিতে পারিনি। এখন আশা করছি, সব অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারব। পূর্বের মতোই ইলিশের দাম ওঠানামা শুরু হয়েছে।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণে জেলে ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। এমনকি নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, জেলেরা বড় সাইজের ইলিশ নদীতে পাবেন। ইলিশের দাম ক্রেতাদের নাগালে রাখতে আমরা বাজারগুলোতে নজরদারি রাখব।
