More

    বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে মামা-ভাগ্নের ঘুষের সিন্ডিকেট!

    অবশ্যই পরুন

    নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের চেইনম্যান জামালের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘ বছর বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে কর্মরত থাকায় অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জামাল। জামাল সাধারণ চেইনম্যান পদে কর্মরত থাকলেও ঊর্ধ্বতন অফিসারের ঘুষ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রায় ৯-১০ বছর বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে কর্মরত আছেন জামাল। এই সুবাদে সেটেলমেন্ট অফিসে সেবা প্রত্যাশীদের কাছে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। আর এই সুযোগ নিয়েই চেইনম্যান জামাল ঘুষের রামরাজত্ব কায়েম করেছেন। সর্বশেষ উপর-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও কারিগরি উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম হাওলাদারের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। অথচ সরকারি অফিসে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছাড়া ব্যক্তিগত কারো রুমে বা কারো সহকারী হিসেবে কাজ করার বিধান নেই। কিন্তু জামাল এ সবের তোয়াক্কা না করে সর্বদা উপর-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও কারিগরি উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম হাওলাদারের রুমে থাকেন এবং একমাত্র তার হুকুম মতই কাজ করেন। অফিসে সেবা নিতে আসা জনসাধারণকে জামাল নিজেকে সহকারী-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও কারিগরি উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম হাওলাদারের ভাগ্নে বলে পরিচয় দেন। আর এতেই জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে শুরু হয় মামা-ভাগনের ঘুষের রাজত্ব।

    গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ ইং তারিখ শনিবার সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অফিস বন্ধ থাকলেও চেইনম্যান জামাল, ঢাকার নারায়ণগঞ্জে সেটেলমেন্ট অফিসে কর্মরত অলি এবং বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের উপর-সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার ও কারিগরি উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম হাওলাদার ৩ জন বহিরাগত লোককে নিয়া অফিসে প্রবেশ করেন এবং জামালের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ পন্থায় ভূমি টেম্পারিংয়ের কাজ করতে থাকেন। এসময় সাংবাদিকরা অফিসে হাজির হয়ে বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মৃধা মোঃ মোজাহিদুল ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এ বিষয় জানেন না বলে জানান। তখন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসেন। ওই সময় ঘটনাস্থলে জামাল থাকলেও ২ লাখ টাকা পকেটে নিয়া জামাল সটকে পরেন বলেও জানাগেছে।

    ওই সময় এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন পোর্টালসহ পত্রিকায় ফলাও করে নিউজ প্রকাশিত হয়। কিন্তু তারপরেও টনক নড়েনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা একপ্রকার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

    এ বিষয়ে উপ-সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার ও কারিগরি উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম হাওলাদার জানান, জামাল মাত্র ৪-৫ ধরে তার রুমে কাজ করছেন। আর ঘুষ আদায়ের ঘটনাকে সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট বলে দাবী করেন। এ সময় তিনি প্রতিবেদককে সরাসরি দেখা করার আমন্ত্রণ জানান।

    এদিকে খোঁজ নিয়া জানাগেছে, বরিশাল নগরীতেও রফিকুল ইসলাম হাওলাদারের রয়েছে কোটি টাকার জমি। এছাড়াও উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও কারিগরি উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, তিনি নলছিটি, ভোলা ও আগৈলঝাড়া সেটেলমেন্ট অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকলেও তিনি স্ব-শরীরে এসব স্থানে উপস্থিত থাকেন না থেকে বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে বসেই কার্য সম্পাদন করেন। ফলে এসব এলাকার ভুক্তভোগী জনসাধারণ পরেন চরম ভোগান্তিতে। কিন্তু সরকারী নিয়মানুযায়ী কোনো অফিসার অতিরিক্ত দায়িত্ব পেলে সেই অফিসে উপস্থিত থেকে কার্য সম্পাদন করার নির্দেশ রয়েছে। এক্ষেত্রে রফিকুল ইসলাম হাওলাদার পুরোই উল্টো।

    এদিকে দীর্ঘ বছর একই স্থানে কর্মরত থাকা ও ঘুষ আদায়ের বিষয়ে অভিযুক্ত চেইনম্যান জামাল বলেন, অফিস আমাকে এখানে রেখেছে। আপনি (প্রতিবেদক) অফিসে এসে খোঁজ নেন আমি কি করি না করি। আপনার চায়ের দাওয়াত রইলো অবশ্যই অফিসে আসবেন।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে হাদি হত্যার পরিকল্পনা, তদন্তকারী সংস্থার ধারণা

    ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় একের পর এক নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। তদন্তে জানা গেছে,...