More

    পটুয়াখালীতে জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত অর্ধশত, হাসপাতালে ভর্তি -২৫

    অবশ্যই পরুন

     স্টাফ রিপোর্টার: গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলায় সরকার থেকে ইজারা পাওয়া খাস জমিতে তরমুজ চাষ করতে গিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছে ৬০ জন কৃষক ও দুই নারী। আহতদের মধ্যে ২৫ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

    আহতরা অভিযোগ করেন, গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিনের চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার ও তার সহযোগীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তবে ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান। খাস জমি নিয়ে বিরোধ নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা হামলা চলমান থাকায় গত শনিবার গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী মাহমুদুল হাসান স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা ও গণঅধিকারের এক নেতাকে নিয়ে আপোষ মীমাংসা করে দেওয়ার পরেও বৃহস্পতিবার এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

    সংঘর্ষে আহতরা হলেন, মোঃ নিজাম গাজী (৬২), নুর মোহাম্মদ সিকদার (৭০), মোঃ আলম হাওলাদার (৪৭), মোঃ কবির মেলকার (৫৫), মোঃ মুসা খান (২৩), মোঃ রিয়াজ মুসুল্লি (৩৮) মোঃ হাসান সিকদার, মোঃ আনোয়ার ফকির (৪৭) এবং মোঃ সিরাজ খা (৬০), মোঃ শফিক হাওলাদার (৪০), মোঃ বাবুল তালুকদার (৪৮), মো: বারেক ফকির (৬০), মো: শাহাবুদ্দিন (৪৯), মো: বেল্লাল ঢালী (৬০), মোঃ সোহেল তালুকদার (৪২), মোঃ জামাল তালুকদার (৫৪), মোসাঃ রেখা বেগম (৩৮), আকলিমা বেগম (৩০), নিলুফা বেগম (৪০), মোঃ ফারুল মীর (৫৫), মোঃ শাহীন মীর (৩০), মোঃ আনোয়ার হোসেন ফকির (৪৮), মোঃ তৈয়ব মোল্লা (৪২), মোঃ ফরহাদ তালুকদার (২৭)।

    এদের সবাইকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংঘর্ষে আহত কৃষক জালাল তালুকদার (৫৪) অভিযোগ করেন,‘ভূমি অফিস থেকে ইজারা পাওয়া জমিতে চাষ দিতে গেলে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস,সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার তাদের ওই জমিতে চাষ করতে বাঁধা দেয়।

    গত শনিবার গলাচিপা ইউএনও স্যার এবং ওসি সাহেব উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে জমি ভাগাভাগি করে বিরোধ সমাধান করে দেন। ইউএনও এর সিদ্ধান্তে জমি কম পেলেও সংঘাত এড়াতে রাজি হই।’ তিনি আরো জানান, আজ দুপুরে তারা ওই জমিতে চাষ ও ঘর তুলতে যান। এসময় তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

    আহত সাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, আমরা চরবাংলায় প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। ওই এলাকার খাস জমি আমরা চরবাংলার মানুষেরাই ভাগ করে খাই। ইউএনও আমাদেরকে একসনা ডিসিআর দিছে। আমাগো নামে আগের এসিল্যান্ড প্রত্যায়ন দিছে। ডিসিআরের জমিতে স্থানীয় বাকের বিশ্বাস, আনোয়ার হাওলাদার ও মতিন চরবাংলা ও চরবিশ্বাস দিয়া কিছু পোলাপান নিয়া আমাগো উপর হামলা করছে। ’ তিনি আরো বলেন, গত তিন মাস আগে উপজেলার ভূমি প্রশাসন তাদের ১৫৫ জন কৃষককে এ জমি একসনা ইজারা দেয়।

    কিন্তু চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস,সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন,ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার তাদের জমিতে চাষ করতে দেয়নি। এরপর কিছুদিন আগে ইউএনও এবং ওসি স্যার আমাদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেন। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই জমিতে গেলে ওয়ার্ড বিএনপির নেতা আনোয়ার হাওলাদার ও তার লোকজন হামলা করে।’ অভিযুক্ত চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন,‘চরবাংলা বিরোধীয় খাস জমি তাদের ঘর ছিল। আজ বৃহস্পতিবার তাদের ঘরটি ভেঙে অন্যরা ঘর নির্মান করছিল।

    এ কারণে নিষেধ করা হয়েছে। চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস বলেন, ‘আমি দশমিনা ছিলাম। হামলার ঘটনার পর আমি জানতে পেরেছি। হামলার ঘটনাটি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবে এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।’ পটুয়াখালী জেলা শাখার যুব অধিকার পরিষদের সহসভাপতি মো. মহিবুল্লাহ এনিম বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি চরবিশ্বাস। কিন্তু এ চরটি আমার ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিচ্ছিন্ন একটি চরের অংশ।

    তাই আমরা চরের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনের সহয়তা আলোচনা করে সুন্দর একটা সমাধান দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে কি হয়েছে আমার জানা নাই।’

    এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশাদুর রহমান বলেন, ‘চরবাংলার একটি গ্রুপ খাস জমি চাষ দিতে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে অনুমতি পায়,আরেক গ্রুপ কৃষক ভূমি অফিস থেকে ইজারা পায়। যা নিয়ে বেশকিছু দিন ধরে দুই গ্রুপ মধ্য বিরোধ চলছিল। বিরোধের ঘটনায় আজ সংঘর্ষ হলে ইজারা পাওয়া কৃষকদের মধ্য ২৩ জন আহত হয়। আহতদের মধ্য ১৭ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।

    তবে শোনা গেছে,অপর পক্ষের লোকজনও আহত হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে গলাচিপা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহামুদুল হাসান বলেন,‘ বিরোধীয় বিসয়টি মীমাংসার জন্য গত শনিবার উভয় পক্ষকে নিয়ে বসা হয়। ওই সময় কৃষকদের বিরোধী গ্রুপ অর্থাৎ আজ যারা হামলা করেছে,তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।

    ওই সিদ্ধান্তের সময় উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এ্যাসিল্যান্ড) ও থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। এঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে আ.লীগ নেতা আরাফাত গ্রেপ্তার

    রিশালে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা আরাফাত রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নগরীর ফজলুল হক অ্যাভিনিউ সড়ক...