More

    পটুয়াখালীতে রগ কেটে যুবককে হত্যা, মৃত্যুর আগে জানালেন জড়িতদের পরিচয়

    অবশ্যই পরুন

    পটুয়াখালী সদর উপজেলায় হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার পর মো. সরোয়ার হাওলাদার (৪০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ শনিবার ভোররাতে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

    এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার সরোয়ার হাওলাদারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ গণি হাওলাদারের ছেলে।

    স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরোয়ার হাওলাদার এলাকায় মাদকের ব্যবসা করতেন। এ নিয়ে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। কেটে দেওয়া হয় তাঁর হাত ও পায়ের রগ।

    ইটবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোস্তফিজুর রহমান মুসা খান বলেন, ঘটনার সময় তিনিসহ স্থানীয় কয়েকজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় পার্শ্ববর্তী ইউনুস সিকদারের বাড়ি থেকে চিৎকার শুনতে পান। দ্রুত ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, সরোয়ারের হাত ও পা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে চিৎকার করছিলেন। তখন তাঁরা সরোয়ারের পরিবারকে খবর দেন এবং তাঁকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

    মো. মোস্তফিজুর রহমান আরও বলেন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক সরোয়ারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পাঠান। এরপর আজ ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

    ভুক্তভোগীর স্বজন মো. ইউনুস সিকদার (৫৫) বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় সরোয়ারকে সাত থেকে আটজন লোক ধাওয়া করলে সরোয়ার দৌড়ে ইউনুসের ঘরে ওঠার চেষ্টা করেন। ঘরে আশ্রয় নেওয়ার আগেই হামলাকারীরা সরোয়ারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে যায়। হামলায় কয়েকজন নারীও অংশ নেন বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে সরোয়ারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এরপর কী হয়েছে, তিনি জানেন না।

    এদিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার সময় সরোয়ারের ভিডিও বক্তব্য সংগ্রহ করেন স্থানীয় লোকজন। বক্তব্যে সরোয়ারকে বলতে শোনা যায়, স্থানীয় ফারুক, ইউনুস, সবুজ ও জাহাঙ্গীর তাঁকে কুপিয়ে আহত করেছেন। এরপর তিনি আর কিছু বলতে পারেননি।

    নিহতের ভাই দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইলিয়াস হোসেন নামে এক ব্যক্তি সরোয়ারের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা আর ফারুক এক লাখ টাকা সুদে ধার নেন। দীর্ঘদিন হলেও এ টাকা তাঁরা পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে সরোয়ারের সঙ্গে ইলিয়াস ও ফারুকের দ্বন্দ্ব চলছিল। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁর ভাইকে ডেকে নেন এ দুজন। তাঁর ভাই হাকিম খানের বাড়ির সামনে গেলে তাঁকে উপর্যুপরি কোপানো শুরু করে। এরপর তাঁর ভাই দৌড়ে ইউনুস শিকদারের বাড়িতে পৌঁছান। এ সময় হামলাকারীরা এসে ইউনুস শিকদারের বাড়ির উঠানে ফেলে সরোয়ারের হাত-পায়ের রগ কেটে চলে যায়।

    সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘সম্ভবত মাদক নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এ কারণে সরোয়ারের ওপর হামলা হয়। হামলার পর গুরুতর অবস্থায় তাঁকে বরিশাল নেওয়া হলে তিনি মারা যান। মৃত্যুর পর ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া মৃত্যুর আগে সরোয়ারের দেওয়া ভিডিও বক্তব্য অনুযায়ী জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

    চাকরি পুনর্বহালসহ দুই দফা দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন অপসো স্যালাইন ফার্মার ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১২টা...