সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌড়নগর এলাকার ১৫ জেলেকে উদ্ধারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। ধলীগৌড়নগরের মঙ্গল শিকদার–লালমোহন বাজার সড়কের মাস্টার বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
নিখোঁজ জেলেদের স্বজনেরা জানান, ১৫ দিন আগে (১০ নভেম্বর) ‘মা বাবার দোয়া’ নামের একটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে ১৫ জন জেলে চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাট থেকে সাগরে মাছ ধরতে যান। পাঁচ দিন পর তাঁদের ফিরে আসার কথা থাকলেও এখনো তাঁরা ফেরেননি। নৌকার মাঝি মো. ফারুক (৪৫) সেদিন রাত ৮টার দিকে পাঁচ দিনের বাজার-সদাই নিয়ে সাগরে রওনা হন।

এরপর থেকে তাঁদের ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে রয়েছেন—ফারুক মাঝি, আলম মাঝি, মো. মাসুদ, আবদুল মালেক, নুরুল্লাহসহ ধলীগৌরনগরের ১ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরও কয়েকজন। পরিবারগুলো শোক ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে। ঘাটে নৌকার শব্দ পেলেই ছুটে যান স্বজনেরা, প্রিয়জন ফিরে আসবে এই আশায়। নৌকার মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, মাঝির ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং আত্মীয়স্বজনের পরামর্শ নিতে গিয়ে থানায় খবর দিতে দেরি হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাটি ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়ে নিখোঁজ হতে পারে। স্বজনদের অভিযোগ, নিখোঁজের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারস্থ হলেও তেমন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে স্থানীয় লোকজন সড়ক অবরোধ করেন। জেলেদের সন্ধানে আত্মীয়স্বজনেরা ট্রলারে করে সাগরেও গিয়েছেন। কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বিভিন্ন থানায় কপি পাঠানো হয়েছে, এমনকি ভারতেও খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমদ আখন্দ বলেন, ‘নিখোঁজের সংবাদ আমরা পেয়েছি, তবে জেলের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ করা হচ্ছে।’
নিখোঁজ জেলে খোকনের স্ত্রী রিপা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর আয়েই সংসার চলত, এখন জানি না, কী হবে।’ নিখোঁজ জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম জানান, ‘স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলেন, ফিরে একসঙ্গে বাবার বাড়ি যাব। এখন তাঁর কোনো খোঁজ নেই।’
