বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারে আট বছর ধরে সেবা দিয়ে আসা তিন কুকুরকে নিলামে বেচে দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার মিরপুর-১৪ পুলিশ লাইন্সে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ডগ স্কোয়াড ‘কে-নাইন’ দলের প্রশিক্ষিত তিনটি কুকুরকে নিলামে তোলা হয়।
ল্যাব্রাডর জাতের ‘কোরি’ ও ‘ফিন’ এবং জার্মান শেফার্ড জাতের ‘স্যাম’ মোট ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা জানান কে-নাইন স্কোয়াডের পরিদর্শক ফখরুল আলম। এর মধ্যে ‘কোরি’ নামের কুকুরটি সর্বোচ্চ ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকায় কিনেছেন একজন সাধারণ নাগরিক। বাকি দুটির মধ্যে ‘স্যাম’কে ৪০ হাজারে এবং ‘ফিন’কে ৩০ হাজার টাকায় কিনেছে পারটেক্স গ্রুপ।
এর ফলে ৪৩টি বিশেষায়িত প্রশিক্ষিত কুকুরের সমন্বয়ে পরিচালিত ডিএমপির ডগ স্কোয়াডে আর অবশিষ্ট রইল ৪০টি। পরিদর্শক ফখরুল বলেন, “আমাদের এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) অনুযায়ী, একটি কুকুরের আট বছর পার হয়ে গেলে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বলা আছে। সে কারণে ২০১৭ সালে বিদেশ থেকে আনা কুকুরগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, এটাই আমাদের প্রসিডিউর। “আট মাস আগেই ওদের বয়স হয়েছিল, বাকি প্রসিডিউর শেষ করতে এই আট মাস সময় লেগেছে।”
নিলামের ঘোষণা আগেই দেওয়া ছিল। মঙ্গলবার অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে এক হাজার টাকা করে জমা দেন। পরে উন্মুক্ত নিলামে তিনটি কুকুর বিক্রি করা হয়। কুকুরগুলো বৃহস্পতিবার হস্তান্তর করা হবে বলে জানান পরিদর্শক ফখরুল। তিনটি কুকুরেরই বিস্ফোরক উদ্ধারের অভিজ্ঞতা রয়েছে জানিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এদেরকে প্রতিনিয়ত প্র্যাকটিসের মধ্যে রাখতে হয়, বাইরে চলে গেলে তিন মাসের মধ্যে আস্তে আস্তে ট্রেনিংটা ভুলে যাবে। “এরা সুস্থ আছে, সহজেই স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারবে।”
সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এরা কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিদর্শক ফখরুল আলম বলেন, “না, বিষয়টা এমন নয়; আমাদের নিয়ম এটা। আমরা নিয়ম মেনেই করেছি।” সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে বিস্ফোরক এবং বিপজ্জনক বস্তু খুঁজে বের করার কাজে বিশেষ প্রশিক্ষিত এ কুকুর তিনটি যুক্তরাজ্য থেকে আনা হয়েছিল। তাদের জায়গায় নতুন কুকুর যুক্ত করা হবে কি না, জানতে চাইলে পরিদর্শক ফখরুল বলেন, “আমাদের আরও ১০টি কুকুর কেনার কথা রয়েছে, হয়তো সামনের বছরে সেগুলো আনা হবে।”
