প্রতিবাদের এক নতুন পদ্ধতি সৃষ্টি করল কুয়াকাটার মানুষ। রাস্তা সংস্কারের নামে নাটকীয়তা বন্ধের তীব্র প্রতিবাদে প্রতীকী জানাজা পড়েন স্থানীয়রা । সড়ক তৈরীর আগেই উঠে যাচ্ছে বিটুমিন। রাস্তার পোলেপ। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জিরোপয়েন্ট থেকে লেম্বুর বন পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কে চলছে এমন এক উন্নয়নযজ্ঞ, যা দেখে স্থানীয়রা বলছেন— “রাস্তা নয়, যেন কাগজের চাটাই!” হাত দিলেই উঠে আসে কার্পেটিং, আর খোয়া যেন লুকোচুরি খেলছে।
মানহীন উপকরণ, কম বিটুমিন, লবণাক্ত বালু— সব মিলিয়ে সড়কটি নির্মাণের আগেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। যে বেড়িবাঁধ সড়ক জলোচ্ছ্বাসে মানুষ বাঁচাবে, সেই সড়কই এখন নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে। বুধবার সরেজমিনে দেখা গেল, কার্পেটিংয়ের পুরো চেহারা যেন “সামান্য বাতাস হলেই উড়ে যাবে” প্রকল্প। যেখানে একটু বেশি বিটুমিন চাই, সেখানে কম; আর যেখানে মাটি দরকার, সেখানে বালুর জমকালো আয়োজন।
এ পরিস্থিতিতে শেষ বিকেলে স্টুডেন্ট এলায়েন্সের ব্যানারে কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ রোডে এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ‘কাফনের কাপড়’ বিছিয়ে তারা প্রতীকী জানাজা পড়েন। পরে দোয়া-মিলাদের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
এতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এলজিইডির তথ্য অনুযায়ী, জিরো পয়েন্ট থেকে সূর্যাস্ত পয়েন্টের আগ পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। কাজ পেয়েছে ‘ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যার মালিক জসিম মৃধা।
ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী চলতি মাসের ২৫ তারিখ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ বাকি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের মাটির বদলে বালু ব্যবহার, লবণাক্ত বালু উত্তোলন, খোয়ার পরিমাণ কম দেওয়া এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে সড়কটি টেকসই হচ্ছে না।পর্যটকরাও সড়কের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
