পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ২ নম্বর মালিখালী ইউনিয়নের মিঠারকুল গ্রামে এক নারী (৩৫) এবং পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তিকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে ভিডিও ধারণ ও পরে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে হেলাল সিকদারসহ পাঁচজনের একটি চক্রের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তরা এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। ভুক্তভোগীরা বারবার কাকুতি-মিনতি করলেও রক্ষা পাননি। সম্প্রতি নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই গৃহবধূ ও এক ব্যক্তিকে বিবস্ত্র করে বুকের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। তারা চিৎকার করলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী নারীর ভাশুরের ছেলে টুটুল সিকদার (৩২) বাদী হয়ে নাজিরপুর থানায় হেলাল সিকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তরা হলেন— হেলাল সিকদার (৩৫), মিলন সিকদার (৩৮), দেলোয়ার ওরফে দেলাল সিকদার (৩০), নান্নু সিকদার (৩৪) ও মামুন সিকদার (২৭)। তারা সবাই মৃত সাহেব আলী সিকদার ও মৃত মকবুল সিকদারের ছেলে এবং একই গ্রামের বাসিন্দা। নারীসহ দুজনকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও প্রচার, চাঁদা দাবি পুলিশকে কামড়ে পালানো সেই ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার অভিযোগে বলা হয়, ভুক্তভোগীর স্বামীর অনুপস্থিতিতে ফোরকান মোল্লা নামের এক পরিচিত ব্যক্তি তার বাড়িতে এলে অভিযুক্তরা পূর্বশত্রুতার জেরে ঘরে ঢুকে তাদের পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে বিবস্ত্র ও মারধর এবং ভিডিও ধারণ করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
টাকা না থাকায় তার ঘরে থাকা আনুমানিক দুই লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং বাকি টাকা না দিলে ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে ভিডিওটি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ভুক্তভোগীরা চরম সামাজিক লাঞ্ছনার শিকার হন এবং এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। মোবাইল ফোনে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘তারা ষড়যন্ত্র করে আমার মানসম্মান নষ্ট করেছে। আমি বাড়িছাড়া।’
অভিযুক্ত হেলাল সিকদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহামুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
