More

    শিক্ষাগুরু বিছানায় কাতরাচ্ছেন ৫ বছর ধরে

    অবশ্যই পরুন

    হাত পা থেকেও নেই। মুখে কথা ফুটছে না। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। বাচ্চার মত হাউ মাউ করে কাঁদেন। সবাইকে স্পষ্ট করে চিনতে পারছেন না। হাজারো শিক্ষার্থীর কারিগর। শিক্ষাগুরু মো. মোসলেম উদ্দিনের এ যেন বেঁচে থাকার আঁকুতি। তিনি অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫ বছর বিছানায় কাতরাচ্ছেন।

    সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মোসলেম উদ্দিন বরগুনার বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত সহকারি প্রধান শিক্ষক ছিলেন। অবসর গ্রহনের পর ৫ বছর ধরে আজও বিছানায় শুয়ে আছেন । ২০১৫ সালের মার্চে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকালীণ এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা দান কালে হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোক করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পর পর দু’বার ব্রেন স্টোকে সব কিছু হারিয়েছেন। ৫ বছর ধরে তিনি বিছানায় পড়ে রয়েছেন।

    জানা গেছে, ঢাকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীন মোহাম্মদ ও মজিবুল হকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থেকে এ পর্যন্ত কোন মতে বেঁচে আছেন। ততটুকু সাধ্য ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা চালিয়েছেন। সব কিছু হারিয়ে আজ তিনি নিঃস্ব। চিকিৎসা করাতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পেয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন। তবুও এ খবর জানা নেই অনেকের কাছেই। গত শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী তাঁর প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা জানাতে উপস্থিত হন তার নিজ বাড়ি সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুরা গ্রামে। এ সময় ঘটনাক্রমে উপস্থিত তার শিক্ষার্থী বেতাগী পৌর শহরের হুমায়ূন স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. রিয়াজুল কবির বাবু সার্বিক অবস্থা দেখে তার চিকিৎসা তহবিলে তাৎক্ষনিক ৩ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করে। যা অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে অনেকেই।

    পারিবারিক সূত্র জানায়, পাচঁ সদস্যের পরিবারে যাদের হাল ধরার কথা বড় ছেলে মিজানুর রহমান মিঠু ও ছোট ছেলে মশিউর রহমান মিলন তারাই এখন বেকার। মহামারী করোণার প্রভাবে কর্মসংস্থান হারিয়ে পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংসার চালাতেই তাদের এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার উপর আবার অসুস্থ বাবার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহণ তাদের পক্ষে অসম্ভাব হয়ে পড়েছে।

    এ বিষয় বেতাগী প্রেসক্লাবের আহবায়ক সাইদুল ইসলাম মন্টু ও সদস্য আকন্দ শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ আমাদের সকলের প্রিয় মোসলেম উদ্দিন স্যারের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। অথচ জীবন সায়াহ্নে এভাবে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে থাকবে এটা দুঃখজনক ব্যাপার।’ তারা আরো বলেন,‘ তাঁর ছাত্র-ছাত্রীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সাহায্যে এগিয়ে আসা উচিত।’

    সকলের জনপ্রিয় এ শিক্ষা গুরু জীবন সায়াহ্নে এসে চিকিৎসার অভাবে বিছানায় শুয়ে ছটফট করছেন। মোসলেম উদ্দিনের স্ত্রী মমতাজ বেগম তার জন্য দোয়া ও মানবিক সহায়তা চেয়েছেন। দেশে-প্রবাসে বিভিন্নস্থানে তার অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, গুনগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীরা একটু পাশে দাঁড়ালে হয়ত তিনি আগামী দিনগুলোতে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন। প্রয়োজনে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের ০১৭৩৬৪৬০৮১৩ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

    বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত...