ভোলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য ৫০ শয্যার একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে কোনমতে। একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির কার্যক্রম। এখানে সেবা নিতে আসা রোগীরা জ্বর, কাশি ও ছোট ছোট কাঁটাছেড়ার চিকিৎসা ছাড়া কিছুই মেলেনা। অন্য রোগের সেবা নিতে যেতে হয় মেঘনা পাড়ি দিয়ে জেলা শহর ভোলায়।
বাইরে থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সুন্দর ভবন দেখে রোগীরা বলেন, ‘উপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট’।
গত এক যুগ ধরে ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নতি করে উদ্বোধন হলেও এখন মেলেনি প্রয়োজনীয় লোকবল। এই ব্যাপারে দাপ্তরিক চিঠি পাঠানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই ডাক্তার, সেবিকা, যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে কাঙ্খিত সেবা বঞ্চিত হচ্ছে দ্বীপের বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ ৯ টি। কিন্তু কাজ করছেন একজন চিকিৎসক। নার্স (সেবিকা) ১৬ জনের মধ্যে রয়েছে ৫ জন। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ ৮৪ জনের মধ্যে ৪২ টি পদ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে খালি। হাসপাতালে সাধারন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দূরের কথা এক্সরে পর্যন্ত নেই। নেই কোন টেকনেশিয়ান ও ফার্মাসিষ্ট।
‘নেই ও সংকট’ থেকে যেন বের হতে পারছেনা মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। অথচ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলার দেড় লক্ষ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী জবেদা, মরিয়ম, সেলিম, শিশুরোগী সুমন, নয়ন সহ অনেকে জানান, হাসপাতালে জ্বর, সর্দি ও কাশি ছাড়া অন্য রোগের সেবা পাওয়া যায় না। অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য ভোলায় যেতে বলে ডাক্তার। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ঔষধও পাওয়া যায় না।
এদিকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা জানান, দিনে-রাতে ডাক্তার একবার আসে। নার্সদের খোঁজ করে পাওয়া যায়না। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ থাকে না, তখন খুব কষ্ট হয়।
এই ব্যাপারে সদ্য যোগ দেওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রেজয়ানুল আলম যুগান্তরকে জানান, ডাক্তার, নার্স ও জনবল সংকট রয়েছে। এছাড়াও রাতের বেলায় বিদ্যুৎ সমস্যা রয়েছে। তবে এইসব সমাধান করা গেলে আমরা এই দ্বীপের মানুষদের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারবো। তারপর রোগীদের সেবা দিতে আপ্রাণ চেষ্ঠা করে যাচ্ছি।