বরিশালের উজিরপুরে প্রফেসর নিরু রায়হান(নিরঞ্জন শীল নিরুর) হত্যাকারীদের ফাঁসি ও ন্যায় বিচারের দাবীতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে।
১১ মার্চ বৃহষ্পতিবার বিকেল ৪ টায় ধামুরা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কে স্থানীয় নজরুল ইসলাম বাবু ফকিরের নেতৃত্বে দীর্ঘক্ষন লাইনে দাড়িয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিহত’র স্ত্রী সৈয়দা শাহিনা আক্তার, ছেলে অনির্বানসহ শতাধিক মানুষ। উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল প্রফেসর নিরু রায়হানের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পান স্ত্রী সৈয়দা শাহিনা আক্তার।
এরপর তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করা হয়েছিল। স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করায় ২০২১ সালের ৮ মার্চ সোমবার নিহত’র লাশ ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
নিরুর স্ত্রী মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে আবেগে আপ্লুত হয়ে সাংবাদিকদের জানান, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা এলাকার গজেন্দ্র গ্রামে মৃত যোগেশ চন্দ্র শীলের ছেলে প্রফেসর নিরু রায়হানকে পরিকল্পিত ভাবে তার ভাইয়েরা হত্যা করেছে।
তিনি চট্রগ্রাম জেলায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ওই জেলার মৃত এস এম আনিসুর রহমানের মেয়ে শাহিনা আক্তার একটি এনজিওতে চাকুরী করত সেখানে তাদের উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০০১ সালে নিরু রায়হান হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে শরিয়া মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলে রয়েছে। তার স্বামীর আরো ৩ ভাই অমল চন্দ্র শীল, বিমল চন্দ্র শীল ও মনোরঞ্জন শীল।
এ ছাড়াও তাদের পরিবারে সুশান্ত শীল নামে এক ভাগিনা রয়েছে। আমার স্বামীর সাথে গত ৪/৫ বছর ধরে তাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
আমার স্বামীর প্রাপ্ত জমি তারা বুঝিয়ে দিতে রাজি ছিল না। এমনকি উক্ত জমির পরচা, রেকর্ড ও গেজেট প্রকাশ হয় আমার স্বামীর নামে।
উল্লেখ্য ৩ ভাই ওই সম্পত্তি না দেওয়ার জন্য তালবাহানা শুরু করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ৬ বার জমি বুঝে নিতে তার নিজ বাড়িতে আসা যাওয়া করে।
এমনকি সম্পত্তি বুঝে নিতে চাইলে আমার স্বামীর সাথে তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী বাড়িতে গিয়ে ২২ দিন অবস্থান করেন এবং সম্পত্তি বুঝে নেওয়ার জন্য এলাকায় বিচার শালিসী ডাকার কথা বলেন তিনি।
এরপর ২১ এপ্রিল বিকেল ৩.৪৪ মিনিটে তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে কল করে আমাকে মৃত্যুর সংবাদ জানায়। ঠিক পৌনে ৬টায় সিমটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মৃত ব্যক্তি ২ ঘন্টা পর নিজের মোবাইলটি কিভাবে বন্ধ করল প্রশ্ন তোলেন তিনি। এ ছাড়াও মৃত্যুর পরে আমার শশুর চেয়ারম্যানের কাছ থেকে স্ত্রীর নাম খালি রেখে মৃত্যু সনদপত্র তোলেন।
সে বিবাহ করেনি ও তার কোন ওয়ারিশ নেই বলে ভূমি অফিসে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করে।
মৃত্যুর ৮মাস পরে আমি ও আমার ছেলে অনির্বান(১৪) বাড়িতে এসে শশুর বাড়ির লোকজনকে সম্পত্তির কথা বলতে গেলেই আমাদেরকে অস্বীকার করে এবং ছেলের জীবনের উপর হুমকি দেয়।