More

    নৌযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে চীন

    অবশ্যই পরুন

    আগে থেকেই চীনের নৌবাহিনী বিশ্বের বৃহত্তম। তারপরও ধারাবাহিকভাবে এর আকার বৃদ্ধিতে কোনো ছাড় দিচ্ছে না চীন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নৌ-সমরের আকার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার বহর বড়, সে-ই বিজয়ী হয় সব সময়।

    পেন্টাগনের নেতারা অবশ্য এরই মধ্যে চীনকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য ‘গতিশীল হুমকি’ হিসেবে ধরছেন। কিন্তু তাদের নৌবহরে থাকা যানের সংখ্যা বলছে ভিন্ন কথা। চীনের নৌবাহিনীর বৃদ্ধির সঙ্গে যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী দৌড়ে পেরে উঠছে না, সেটিও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে।

    ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো মার্কিন নৌবাহিনীকে পেছনে ফেলে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভি (পিএলএএন)। পেন্টাগনের তৈরি চীন সামরিক শক্তি প্রতিবেদন ২০২২ অনুসারে, চীনের এখন প্রায় ৩৪০টির মতো যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। প্রতিবেদনটি নভেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হচ্ছে, আগামী দু্ই বছরে দেশটির মোট জাহাজের সংখ্যা ৪শতে গিয়ে ঠেকবে।

    এবার আসা যাক যুক্তরাষ্ট্রের রণতরী বহরের দিকে। প্রায় ৩শর কাছাকাছি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে দেশটির। পেন্টাগনের লক্ষ্য ২০৪৫ নাগাদ সাড়ে ৩শ যুদ্ধজাহাজের সক্ষমতা তৈরির। মূলত চীনকে পরাস্ত করার জন্য মার্কিন সামরিক নেতারা নির্ভর করছেন প্রযুক্তির ওপর।

    গত গ্রীষ্মে প্রকাশিত ইউএস নেভি নেভিগেশন প্ল্যান ২০২২-এর নথি বলছে, ‘বিশ্ব নতুন যুগের যুদ্ধকৌশলে প্রবেশ করছে, যেখানে প্রযুক্তি, ধারণা, অংশীদার এবং ব্যবস্থার সমন্বয় থাকবে। ফলে শুধু নৌবহরের ওপর যুদ্ধের বিজয় নির্ভর করবে না।’

    তবে ইউএস নেভাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক স্যাম তাংগ্রেদি বলছেন, ব্যাপারটি এত সাদামাটা নয়। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিলে দেখা যাবেÑ যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো যুদ্ধে হারিয়ে দিচ্ছে চীন। এ নিয়ে নিজের করা গবেষণা ইউএন নেভাল ইনস্টিটিউটে প্রসিডিংস সাময়িকীতেও প্রকাশ করেছেন তিনি।

    সেখানে তাংগ্রেদি ২৮টি নৌযুদ্ধের উদাহরণ টেনেছেন। তিনি বলেছেন, এগুলোর মধ্যে মাত্র তিনটি যুদ্ধে নৌবহরের আকারকে পরাস্ত করেছে প্রযুক্তি। বাদবাকিগুলোতে জয় হয়েছে বিশাল আকারের। উল্লিখিত যুদ্ধগুলোর মধ্যে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের গ্রেকো-পার্সিয়ান যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। শুধু প্রাচীনকাল নয়। বলা হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের কথাও। উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র-সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নায়ুযুদ্ধ দ্বন্দ্বের বিষয়াদিও।

    এ ছাড়াও তাংগ্রেদি লিখেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি প্রযুক্তি আমেরিকার চেয়ে উন্নত ছিল। কিন্তু জয় হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তিনি বলেন, ‘ইম্পেরিয়াল জাপানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ছিল। যেমনÑ দ্য জিরো ফাইটার, লং-ল্যান্স টর্পিডো, এরিয়াল টর্পিডোÑ যা অগভীর পানিতে আঘাত হানতে পারত। কিন্তু তারপরও আকারের দিক থেকে সেবার জাপানের নৌবাহিনীকে পরাস্ত করতে পেরেছিল মার্কিন নৌবাহিনী।’

    তাংগ্রেদির কাজের প্রশংসা করেছেন লন্ডনের কিংস কলেজের যুদ্ধ ও কৌশলের অধ্যাপক আলেসিও পাতালানো। তিনি বলেছেন, আকার সম্পর্কিত ভুল ধারণার বিষয়টি তার গবেষণায় খুব সুন্দরভাবে উঠে এসেছে।

    পাতালানো দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিদের প্রশিক্ষিত করে তোলার দিক থেকে এবং পরিচালনাগত সক্ষমতার দিক থেকে প্রতিযোগিতামূলক ভূমিকা রাখতে পারে বড় তরী। আর নৌযুদ্ধে ত্যাগ স্বীকার বাস্তব একটি বিষয়। ফলে দ্রুত সে জায়গা নেওয়ার সক্ষমতা থাকাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

    বরিশাল ডট নিউজ/স্ব/খ 

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে আবাসিক হোটেল পপুলার থেকে ১৬ নারী-পুরুষ আটক

    বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে ১৬ নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে নগর‌ীর পোর্ট...