বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ত্রিশ বছর আগে নির্মিত একটি সেতুর বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শতশত কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। জরাজীর্ণ সেতুটির দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের উদ্যোগে নেয়া হয়নি। প্রতিদিন শতশত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের সুন্দারগাও এবং থানেশ্বরকাঠি গ্রামের সোয়েব হাওলাদারের বাড়ি সংলগ্ন খালের উপর ত্রিশ বছর পূর্বে এই সেতুটি নির্মান করা হয়। সেতুটি নির্মানের ৫/৬ বছর পর থেকেই সেতুর উপর দুই পাশে সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে যাওয়ায় এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো মুহুর্তে এটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ বিধ্বস্ত এই সেতুটি বিকলাবস্থার কারনে চলাচলের একদম অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের শতশত কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারন লোকজন। বিকল্প কোনো যাতায়াত পথ না থাকায়, মরণফাঁদ জেনেও পার
হচ্ছেন গ্রামবাসীসহ কোমলমতি শিশু-বৃদ্ধরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির দুইপাশের সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে যাওয়ায় এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের জন্য মোটরসাইকেল, ইজিবাইক ও ভ্যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিনই সেতুটি পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন একাধিক লোকজন।
সেতুটির বেহাল দশার কারনে উপরের পাটাতন ধসে পড়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি জেনেও পার হচ্ছেন এলাকাবাসী। কিন্তু যোগাযোগের তাগিদে প্রতিনিয়ত সেতু দিয়ে কোন যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না।
শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই করুণ। যে কোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন পথচারীসহ শিক্ষার্থীরা।
মোহনকাঠী স্কুল এ্যান্ড কলেজের শতশত শিক্ষার্থী ও উপজেলা সদরে চলাচলের একমাত্র সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। এছাড়া জমি থেকে ধান আনার জন্য কোন গাড়ি চলাচল করতে না পারায় কৃষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভাঙ্গা সেতু দিয়ে পার হচ্ছেন।
সুন্দরগাও গ্রামের বাসিন্দা সোয়েব হাওলাদার বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর আগে নির্মিত এই সেতুটির সিমেন্টের তৈরি পাটাতন গুলো ধসে যাওয়ায় দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও সেতুটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। সেতুটির শুরুতেই পাটাতন গুলো না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভাঙ্গা সেতুর পাশের রেলিং ধরে পার হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
থানেশ্বরকাঠি গ্রামের আউয়াল হাওলাদার জানান, সেতুটিতে মানুষ উঠলে কখনো ডানে অথবা কখনো বামে কাঁত হয়ে যায়। অথচ সেতুটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনো মাথা ব্যথা নেই। কয়েক বছর যাবৎ শুনি সেতুটি মেরামত করা হবে, কিন্তু মেরামত কবে হবে তা কেউই বলতে পারে না।
রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলাম মোস্তফা সরদার বলেন, সুন্দরগাও থানেশ্বরকাঠি গ্রামের পাশে অবস্থিত এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে। যাতে করে সেতুটি সংস্কার হলে এই এলাকার মানুষসহ আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির অবস্থা খুবই বেহাল। সেতুটি সরেজমিন পরিদর্শণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরিশাল ডট নিউজ/স্ব/খ