জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: বরিশাল নগরীর নিখোঁজ যুবক ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লা (৩৮) হয়েছে। স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে বন্ধু ও তার সহযোগীরা তাকে অপহরন করে হত্যা করে। র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর অপরাধীরা হত্যার কথা স্বীকার করে। নিহত শাহিন মোল্লা (৩৮) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শাহিন মোল্লা বরিশাল নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রুপাতলী এলাকার মোঃ এমদাদুল হক মোল্লার ছেলে।
অপরদিকে গ্রেফতারকৃতরা হলো বরগুনা জেলার আমতলী থানাধীন কালীপোড়া এলাকার রুহুল আমিন মোল্লার ছেলে ইউসুফ মোল্লা (২০) ও তার দুই সহযোগী পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার গন্ডামারি এলাকার রকিবুল ইসলামের ছেলে নাজমুল ইসলাম অমি (১৯) এবং বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সোনাহার গ্রামের মিজান শিকদারের ছেলে হামিম শিকদার (১৯)।
শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মাহমুদুল হাসান।
লিখিত বক্তব্যে গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, একই এলাকায় বসবাসের কারনে খুন হওয়া শাহিন মোল্লার সাথে গ্রেফতার হওয়া মোঃ ইউসুফ মোল্লার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পূর্বে ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লা গ্রেফতার ইউসুফ মোল্লার সদস্য বিবাহিত স্ত্রী স্বর্ণা বিশ্বাসকে কু প্রস্তাব দেয়। এতে ইউসুফ মোল্লা ব্যবসায়ী শাহিনের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১০ টার দিকে ইউসুফ তার অপর দুই সহেযোগী নাজমুল ও হামিকে সাথে নিয়ে ব্যবসায়ী শাহিনকে বরিশাল নগরের রুপাতলী কাঠালতলা তালকুদার হাউজিং প্রথম গলির নাহার ভিলার চতুর্থ তলায় নিয়ে যায়। যেখানে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ইউসুফ মোল্লা ভাড়া থাকতেন।
ওই বাসায় নেয়ার পর গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে বাথরুমের ফলস্ ছাদের ওপরে গুম করে রাখে। এছাড়া যাতে কেউ না বুঝতে পারে সেজন্য ফলস্ ছাদের দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
এদিকে শাহীন মোল্লা নিঁখোজ হওয়ার ঘটনায় তার স্বজন মোঃ আঃ খালেক হাওলাদার ৩০ জানুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন। পাশাপাশি ৩১ জানুয়ারি শাহীন মোল্লার বোন শিরিন আক্তার মুন্নী র্যাবের নিকটও একটি অভিযোগ করেন।
যার ধারবাহিকতায় র্যাব তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এরইমধ্যে ২ ফেব্রুয়ারী গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের পরিবারের নিকট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এ অবস্থায় র্যাব-৮, সিপিএসসি, বরিশাল কর্তৃক ছায়াতদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রেফতার কৃতদের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
পরে সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোঃ রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাব-৮, সিপিএসসি, বরিশাল ক্যাম্পের একটি বিশেষ অভিযানকারী দল বরিশাল নগরের বিমানবন্দর থানাধীন পশ্চিম ইছাকাঠি, কাশিপুর ও বাকেরগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালায়। শনিবার এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।