আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইচ গেট সংস্কার না করায় বরিশালের আগৈলঝাড়ার ২০টি ইরি-বোরো ব্লকে জোয়ারের পানি প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাওয়ায় পাকা ধানের ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা পাকা ধান নিয়ে দুঃচিন্তার মধ্যে রয়েছে। ধান তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই গ্রামের কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট মহাসড়কের বড়মগড়া নামক স্থানে একটি স্লুইচ গেটের কপাট সংস্কারের জন্য দেড় মাস পূর্বে খুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইচ গেট সংস্কার করে না দেওয়ায় বর্তমানে ওই স্লুইচ গেট দিয়ে জোয়ারের পানি জমিতে উঠে ২০টি ইরি ব্লকের ক্ষেতের পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে। ওই ব্লক গুলোর প্রায় ১ হাজার ৫শত কৃষকের ১ হাজার ১শত একর ক্ষেতের ফসল নিয়ে দুচিন্তার মধ্যে রয়েছে।
একারনে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বড়মগড়া, জলিরপাড় ও কোদালধোয়াসহ পাশ্ববর্তী এলাকার ২০টি বোরো ব্লকে ১ হাজার ৫শত কৃষকের ১ হাজার ১শত একর ক্ষেতের ফসল নিয়ে দুচিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। উত্তর বড়মগড়া গ্রামের স্লুইচগেট সংলগ্ন বোরো ব্লকের ম্যানেজার অরবিন্দু অধিকারীর প্রায় ৪২ একর, গোবিন্দ মন্দির সংলগ্ন বোরো ব্লকের ম্যানেজার সুবোধ বাড়ৈর প্রায় ৬৮ একর, একই এলাকার ম্যানেজার দীনবন্ধু শিকারীর প্রায় ৬৩ একর, উত্তর বড়মগড়া গ্রামের জন্বেঞ্জয় বাড়ৈর ৭৩ একর, বড়মগড়া গ্রামের ইউপি সদস্য অজিত শিকারীর ৪১ একর, জলিরপাড় গ্রামের বোরো ব্লকের ম্যানেজার লিটন ফকিরের ৩৭ একর, একই এলাকার বোরো ব্লক ম্যানেজার মনির খানের ৪২ একর, কোদালধোয়া গ্রামের বোরো ব্লকের ম্যানেজার আব্দুর রব ফকিরের ৪০ একর, একই এলাকার বোরো ব্লকের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর খানের রয়েছে প্রায় ৫৫ একরসহ ২০টি বোরো ব্লকের প্রায় ১ হাজার ১শত একর জমিতে বাম্পার ফলন হলেও ক্ষেতে জোয়ারের পানির প্রবেশের কারনে পাকা ধান কেটে ঘরে নেওয়ার দুঃচিন্তার মধ্যে রয়েছেন চাষী ও ব্লক ম্যানেজাররা।
দেড় মাস পূর্বে স্লুইচ গেট সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালাম এর নির্দেশে মালামাল খুলে নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ওই স্লুইচ গেট সংস্কার না হওয়ার ওই স্লুইচ গেট দিয়ে পানি ঢুকে ২০টি ব্লকের পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে। ব্লকের কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন এর কাছে ২০ এপ্রিল পাকা বোরো ধানের ক্ষেতে পানি উঠার ঘটনা সমাধানের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
এব্যাপারে জলিরপাড় গ্রামের চাষী ও ব্লক ম্যানেজার আব্দুর রব ফকির বলেন, ওই ব্লকে জোয়ারের পানির কারনে তার ৭ একর জমিতে হাটু সমান পানি হওয়ায় পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালাম বলেন, আমরা স্লুইচ গেট সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রস্তাব পাশ হয়ে এসেছে। দুই-এক দিনের মধ্যে দ্রুত স্লুইচ গেট সংস্কার করা হবে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, পাকা ধানের ক্ষেতে পানি ওঠার ঘটনার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত দেওয়ার পর আমাকে জানিয়েছে। আমি কৃষি বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন কৃষকদের লিখিত পাওয়ার ঘটনার সত্যাতা স্বীকার করে বলেন, আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়কে ঘটনাটি দ্রুত সমাধান করার নির্দেশ দিয়েছি।