বরগুনার বিতর্কিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হাইকোর্টে তৃতীয় দফায় জামিনের আবেদন করেছেন। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার মিন্নির আইনজীবী শাহিনুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দুবার জামিনের আবেদন করলেও জামিন পাননি তিনি। অবশেষে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানির জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেন।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা পৌরসভার কলেজ রোডে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত পাঁচ/ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় নিহত রিফাতের বাবা প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেন। পরে একই বছরের ২ জুলাই সকালে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫) নিহত হন।
হত্যার ২০ দিন পর ওই বছরের ১৬ জুলাই মিনিকে তার বাবার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত বলে মনে করায় ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন। গত ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে আসামি করে নাবালক ও নাবালক এই দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তাদের মধ্যে 10 জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং 14 জন নাবালক।
২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাপ্তবয়স্কদের বিচার করে মিন্নিসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া ৬ আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। খালাস পান চার আসামি। পরে একই বছরের ৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আসে। এছাড়া গত ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করেন। হাইকোর্ট মিন্নির আপিল গ্রহণ করে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা স্থগিত করেন।
অপরদিকে ১৪ নাবালকের বিচার শেষে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর বরগুনা জেলা মহিলা ও শিশু আদালতের বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছর, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।