প্রচণ্ড তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তাই তীব্র তাপদাহের মাঝে একটু স্বস্তি পেতে শৌখিন ক্রেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছে মধু মাসের ফল তাল শাঁসের কদর বেড়ে গেছে। গরমে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে এ ফল।
সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় এসময় বিভিন্ন বয়সী মানুষের পছন্দের তালিকায় থাকে তাল শাঁস। তালের নরম কচি শাঁস খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বর্তমানে এর চাহিদা বেড়েছে। আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কের মোড়ে মোড়ে বিক্রেতারা এখন হরদমে বিক্রি করছেন তাল শাঁস। কোন কোন বিক্রেতারা ভ্যানযোগে পাড়া ও মহল্লায় ঘুরে ঘুরে তাল শাঁস বিক্রি করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ঘুরে তাল শাঁস ক্রয় করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন শত শত পরিবারের লোকজন। তাল শাঁস বিক্রেতা অনু সর্দার জানান, এক একটি তাল গাছ ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায় ক্রয় করে থাকি। পরে সেই তাল গাছ থেকে তাল পেড়ে ভ্যানযোগে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি।
তাতে একটি তাল গাছে ভালো ফলন হলে সেই গাছের তাল বিক্রি করে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা আয় করা যায়। এছাড়া প্রচণ্ড গরম থাকায় তাল শাঁসের চাহিদা রয়েছে বেশি । প্রতিটি তালের শাঁসের পিস বিক্রি হচ্ছে ১০—১৫ টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ তাল শাঁস বিক্রি হয়।
এতে তার লাভ হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তাল শাঁস ক্রেতা তানিয়া আক্তার, চম্পা রায়, চিত্ত ঘরামি, কাওছার আকন জানান, চলতি মৌসুমে তালের ফলন কম হওয়ায় উপজেলার সর্বত্র তাল শাঁসের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে চড়া মূল্যে এ মৌসুমি ফল বিক্রি করতে হচ্ছে বলেও সে উল্লেখ করেন।
তাল শাঁস বিক্রেতা অনু সর্দার আরও জানান, প্রতিটি তাল শাঁস তিনি ১০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এতে তার প্রতিদিন তিন থেকে চার’শ টাকা আয় হচ্ছে। শৌখিন ক্রেতা থেকে শুরু করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারীরা প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে ভিড় করছেন তাল শাঁস বিক্রেতাদের কাছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ি থামিয়ে অনেক শৌখিন ক্রেতারাও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য পীর (একবোটা) হিসেবে তাল শাঁস ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। রিকশা চালক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশার লোকজনই মৌসুমি ফল তাল শাঁস ক্রয় করতে ভিড় করছেন বিক্রেতাদের কাছে। চলতি মৌসুমে তালের ফলন কম হওয়ায় বিক্রেতাদের আনা মৌসুমি ফল তাল শাঁস মুহূর্তের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।