More

    পটুয়াখালীর পাঁচ কোটি টাকার সৈকত সড়ক সমুদ্রে, অনিয়মের সত্যতা পেল দুদক

    অবশ্যই পরুন

    পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩০০ মিটার নির্মাণাধীন সৈকত সড়কটি সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই জোয়ারের পানিতে গত ২৯ মে সড়কটি সমুদ্রে বিলীন হয়ে যায়।

    এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিন ৭ সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন। সম্প্রতি সড়কটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হওয়ার পরে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। পরে সড়কটি পরিদর্শনে আসেন বিভাগীয় কমিশনার। এ ঘটনায় দুদক কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নামে দুদক। সোমবার কুয়াকাটা ডিসি পার্কসংলগ্ন এলাকায় ধসে যাওয়া সড়কের কাজের মান পরিদর্শন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পটুয়াখালী জেলার সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাসের নেতৃত্বাধীন একটি টিম।

    পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক খালিদ হোসেন, কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদেকসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা। পরিদর্শন শেষে সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস জানান, এই প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ আমাদের দুদকে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সরেজমিনে এসে আমরা যেটুকু পেয়েছি, তাতে বোঝা যায় এটা একটি অপরিকল্পিত প্রকল্প। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

    যার মধ্যে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ইতোমধ্যেই উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যার পুরো টাকাটাই জলে ভেসে গেছে। এই প্রকল্পের শুরুতে একটি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত ছিল। যেটি করা হয়নি। আমাদের কাছে জমা পড়া অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। আমরা সরেজমিনে যা পেয়েছি তার একটি রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেব।

    কমিশন থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের ঘনিষ্ঠ তিন সহযোগী কুয়াকাটা পৌর শ্রমিকলীগের সদস্যসচিব ছগির মোল্লার মালিকানাধীন মেসার্স মোল্লা ট্রেডার্স, আরেক সহযোগী পৌর শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেনে’র মালিকানাধীন মেসার্স আবরার ট্রেডার্স ও সাবেক পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাদ্দাম মালের মালিকানাধীন এসএম ট্রেডার্স স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কাজ পায় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ ইট ও বালু দিয়ে নিম্নমানের কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

    অথচ পৌর মেয়রের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। ইতিমধ্যে প্রকল্পের বিপরীতে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, নাগরিক সমাজ ও পর্যটকদের চোখে এখন এ প্রকল্পটি ‘দৃষ্টান্তমূলক ব্যর্থতা’র প্রতীক। কোটি টাকার প্রকল্পে দায়িত্বহীনতা, স্বজনপ্রীতি ও পরিকল্পনার অভাব— সব মিলিয়ে প্রকৃত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছেন সকলে।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    পবিপ্রবিতে মিথ্যা অভিযোগে র‌্যাগিং ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

    পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৯...