মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অবৈধ জাল ও জাটকা নিধন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়াসহ প্রাকৃতিক নানা কারণে ইলিশের উৎপাদন কমেছে। এ ক্ষেত্রে নদীর নাব্যতা হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন, ইলিশের অভয়াশ্রম–সংলগ্ন নদীর তীরে কথিত উন্নয়ন প্রকল্পকে দায়ী করেন তিনি।
এ ছাড়া তিনি ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে জাটকা সুরক্ষা ও প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে অভিযান পরিচালনাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে বরিশাল শহরের বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে এক কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা। উপকূলীয় এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হওয়া, এর উন্নয়নের সম্ভাবনা ও সমাধান নিয়ে কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদা আখতার। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস), বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশন ও দ্য কোস্টাল ভেট সোসাইটি বাংলাদেশ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘কারেন্ট জাল ও অন্যান্য জালের কারণে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি, অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মাছ ধরা বন্ধ করছি।
আশা করি, ভবিষ্যতে উৎপাদন বাড়বে এবং দামও কমবে।’ ইলিশের দামের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ন্ত্রণে নদী থেকে বাজারে আসা পর্যন্ত যেভাবে হাত বদল হয়, সেটি বন্ধ করার পরিকল্পনা আছে। কর্মশালার বিষয় নিয়ে উপদেষ্টা জানান, চারণভূমিতে পরিকল্পনা ছাড়াই অনেক কিছু গড়ে উঠছে, যা মোটেও কাম্য নয়।
এর কারণে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাণিসম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতিনির্ধারণ ও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারলে চারণভূমিগুলোকে রক্ষা করা যাবে। এর মাধ্যমে মহিষের মাংসের উৎপাদন বাড়াতে পারলে দেশে মাংসের সরবরাহ বাড়ানো যাবে। কর্মশালায় গবেষক, পশুচিকিৎসক, বরিশাল বিভাগের জেলা-উপজেলা থেকে আগত খামারি ও স্থানীয় প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সুফিয়ান ও গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার (জিজেইউএস) নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাফেলো সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ওমর ফারুক।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষের চারণভূমি দিন দিন কমে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ভূমি দখল ও কৃষিজমির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মহিষ পালনকে হুমকির মুখে ফেলছে। অথচ এ অঞ্চলে দুধ, মাংস ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বাড়াতে মহিষ খামার ও টেকসই চারণভূমি উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।