বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের উচ্ছেদে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের উচ্ছেদ কার্যক্রম কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী বিভাষ চন্দ্র বিশ্বাস প্রজ্ঞা পারমিতা, অনুপ সাহা, মিনা রানী দে। এর আগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। অ্যাডভোকেট সৌমিত্র সরদার, হিন্দোল নন্দী, বিপ্লব পোদ্দারসহ কয়েকজন আইনজীবী এ রিট আবেদন দায়ের করেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ রিট দায়ের দায়ের করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্ছেদ-আতঙ্কে আছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের (সুইপার) একটি কলোনির বাসিন্দারা। নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠপট্টি এলাকার ওই কলোনিতে ৩৬টি পরিবারে প্রায় ১০০ সংখ্যালঘু হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যরা বসবাস করেন। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে আগামী দুর্গাপূজার পর তাদের এই কলোনি ছেড়ে দিতে হবে।
এতে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন এই কলোনির বাসিন্দারা। এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে নগর ভবনে গিয়ে প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন কলোনির বাসিন্দারা। স্মারকলিপি প্রদানকারীদের মধ্যে হরিজন সদস্য মুনু লাল বলেন, আমরা যেন সুইপার কলোনিতেই বসবাস করতে পারি, এমন আবেদন জানিয়েছি। প্রশাসক বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশা করছি।
বাসিন্দাদের দাবি, শতাধিক বছর ধরে তারা নগরের কাঠপট্টি এলাকার এই কলোনিতে বসবাস করে নগরের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের দায়িত্ব পালন করছেন। এতো বছরেও তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা হয়নি। কিন্তু গত সপ্তাহে হঠাৎ করে তাদের নতুন জায়গায় যেতে বলা হয়েছে, যা তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ২০ বছর বয়সী বীনা রানী বলেন, এখানেই আমার জন্ম এবং এখানেই বিয়ে।
সাত পুরুষ ধরে আমরা এখানে আছি। হঠাৎ করে সিটি করপোরেশন আমাদের প্রতি কেন এমন আচরণ করছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। ৭০ বছরের মুনা আক্ষেপ করে বলেন, আমরা সারা জীবন নগরায়ণে সেবা দিয়েছি। এখন কি ভিটেমাটি ছাড়তে হবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানে বহুতল মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেজন্য সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে উচ্ছেদের তৎপরতা চলছে।