পটুয়াখালীর বাউফলে গ্রীষ্মকালীন ফুটবল খেলার অনুষ্ঠানে মো. আবদুল্লাহ আরাফাত নামের এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে আহত করেছে অপর এক শিক্ষার্থী। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় বাউফল পাবলিক মাঠে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী নাজিপুর ইউনিয়নের ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ও একই ইউনিয়নের ইসমাইল গাজীর ছেলে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অর্ণব বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডের ভাড়াটিয়া তোফাজ্জল হোসেন তপুর ছেলে। তার গ্রামের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর পৌরশহরের ৮নং ওয়ার্ডের মজিদ কলেজ রোডে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১১টার সময় বাউফল পাবলিক মাঠে গ্রীষ্মকালীন ফুটবল খেলা আরম্ভ হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম, বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান, একাডেমিক সুপারভাইজার নুরনবীসহ বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে দুপুর ১২টার সময় নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বাউফল সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় একাদশ মাঠে নামে।
খেলা গোলশূন্য হলে ট্রাইবেকারে চলে যায়। নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় তিন গোলে জয়লাভ করে। এরপরই বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এ.কে অর্ণব নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে। পুলিশ তাকে রক্ষা করতে গেলে পুলিশের ওপরও হামলা করে অর্ণব। নাজিরপুর একাদশের অধিনায়ক তাহমিদ ইসলাম বলেন, ওই ছেলেকে আমরা চিনি না। সে কোনো খেলোয়াড়ও না। আরাফাত ভাল খেলে ওদেরকে হারিয়েছে বলেই এ হামলা করেছে।
আহত আরাফাতের মা কুলসুম বেগম বলেন, প্রশাসনের সামনে আমার ছেলেকে দিন-দুপুরে ছুরিকাঘাত করেছে। আবারও করতে পারে। ভাল পড়ালেখা ও খেলাধুলা করে এটা কি আমার ছেলের অপরাধ? আমি বিচার চাই। হামলায় আহত উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আমিসহ আর একজন পুলিশ সদস্য খেলার মাঠে দায়িত্বে ছিলাম। সিক্সগিয়ার (ছুরি) নিয়ে একটি ছেলে অপর এক শিক্ষার্থীকে হামলা করে।
থামাতে গেলে আমি কিছুটা আঘাত পাই। নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয় জয়লাভ করেছে। ছেলেরা উল্লাস করছে এরই মধ্যে এক ছেলে এসে আমাদের ছেলেদের ওপর ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পুলিশ এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও হামলা করে। বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রশাসনকে বলেছি৷
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের ওপর হামলাকারী যেই হোক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।