রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি : দরজায় কড়া নাড়ছে বহু কাঙ্ক্ষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস গত শুক্রবার জাতিসংঘের চলমান অধিবেশনে তার ভাষণে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারীর প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ঘোষণা করার কথাও জানিয়েছে ইসি।
ফলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। নির্বাচনের এই বাতাবরণে পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ-কাউখালী-ভান্ডারিয়া) আসনে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আগাম গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে নিজেদের প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন। এবারের বহু কাঙ্ক্ষিত নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি থেকে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। এসব নেতারা এরইমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ ও মতবিনিময়সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়াও জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থীরাও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ,জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে ক্লীণ ইমেজের প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও কৃষক দলের সাবেক সদস্য, পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সহ-সভাপতি এবং স্বরূপকাঠী (নেছারাবাদ) উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও সভাপতি বিশিষ্ট শিপিং ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ফকরুল আলম জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী ফকরুল আলমের ব্যক্তিগত ক্লীণ ইমেজের পাশাপাশি তার প্রয়াত পিতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় দেশবরণ্যে দানবীরখ্যাত ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আব্দুর রহমানের মহানুভবতা, জনপ্রিয়তা ও সুখ্যাতি তার জন্য বাড়তি পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে।
বাবার জনকল্যাণে প্রতিষ্ঠিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ,ইয়াতিমখানা, হাসপাতাল, গুচ্ছগ্রামসহ মানবিক এবং শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তার অবর্তমানে ফকরুল আলম পৃষ্টপোষকতা করে সবার মন জয় করেছেন। ১৯৮০ সালে তৎকালীণ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রদলে যোগদানের মাধ্যমে ফকরুল আলমের রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তিনি ১৯৮২ সালে ছাত্রদলের ব্যানারে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি সাংগঠনিক যোগ্যতা ও দক্ষতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য হন। ১৯৮৮ সালে তিনি পিরোজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,২০০১ সালে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য এবং ২০০৯ ও ২০১২ সালে পিরোজপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি স্বরূপকাঠী (নেছারাবাদ) উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন। জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য তিনি। ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত টানা দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ ও লালন করে দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ অকুতোভয় নেতা হিসেবে কেন্দ্র থেকে তৃনমুলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ দীর্ঘ সময়ে রাজনীতির কন্টকাকীর্ণ পিচ্ছিল পথে তাকে নানা প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। তবু তিনি বিচলিত কিংবা দমে যাননি বরং নবউদ্যমে এগিয়ে গেছেন, সামনের সারিতে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ওয়ান ইলেভেনসহ আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৭ বছরের শাসনামলে তাকে মিথ্যা মামলাসহ নানা ভাবে নির্যাতন ও হয়রাণির শিকার হতে হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের চরম সংকট মুহুর্তে তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন এবং টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাকে কথা বলিয়ে দেন। এতে নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হয়ে তারা উজ্জীবিত হন। দুঃসময়ের ত্যাগী ,নির্যাতিত, সৎ ,দক্ষ ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে ফকরুল আলম দলীয় নেতা-কর্মীসহ নির্বাচনী এলাকার দলমত,শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে আপামর জনতার হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন।
তিনি ১৯৯৬, ২০০১ ,২০০৬ ( ১৫ ফেব্রুয়ারী), ২০০৮ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী জিয়া অন্তঃপ্রাণ নেতা ফকরুল আলম বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের সুখী সমৃদ্ধশালী ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মানের দৃপ্ত শপথে দীর্ঘ সাড়ে চার দশক ধরে জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন নিবেদিতপ্রাণ সৈনিক হিসেবে কেন্দ্র থেকে তৃনমুল পর্যন্ত দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে নিরলস ও আপসহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
আমার ঐকান্তিক বিশ্বাস এবার দল আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের এ ত্যাগ-তিতিক্ষার যোগ্য মুল্যায়ন করবে। আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে দলমত,শ্রেণী-পেশা,ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আপামর জনতার অকুন্ঠ সমর্থনে বিজয়ের মধ্যদিয়ে আসনটিকে পুনরুদ্ধার করে দলকে উপহার দেবো এবং নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়া উপজেলাকে বৈষম্যহীন উন্নত-আধুনিক তিলোত্তমা মডেল উপজেলায় রূপান্তর করবো।