More

    মহাষ্টমীর অঞ্জলীতে বানারীপাড়া মন্দিরে ভক্ত-পূজারিদের ভিড়

    অবশ্যই পরুন

    রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি : বরিশালের বানারীপাড়ায় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজা-মন্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মহা অষ্টমী উদযাপন করেছেন। মহাষ্টমীর অঞ্জলিতে অগ্নি, বায়ু, বস্ত্র, পুষ্প ও মাল্য-এই পাঁচ নৈবেদ্যে পূজিত হয়েছেন দেবীদুর্গা।

    দুর্গাভক্তরা দেবীর আরাধনায় পূজা-মন্ডপে দিনভর ভিড় জমিয়েছেন। পূজা শেষে হাতের মুঠোয় ফুল, বেলপাতা নিয়ে ভক্তরা মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে পূজার অঞ্জলি দেন দেবীর পায়ে। করজোড়ে কাতর কণ্ঠে জগজ্জননীর কাছে শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন ভক্তরা।

    ঢাকের বাদ্য, কাঁসর ঘণ্টা কিংবা শঙ্খধ্বনিতে দেবীর আরাধনার পাশাপাশি সবকিছুতেই আনন্দমুখর ছিলো মন্দির প্রাঙ্গন। বানারীপাড়া বাজার হরিসভা মন্দিরে মহাষ্টমীর অঞ্জলিতে এতটাই ভিড় ছিলো যে সকল ভক্তদের অঞ্জলি নিতে পাঁচবার মন্ত্র পাঠ করতে হয়েছে পুরোহিতকে। নির্জলা উপবাস থেকে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেন,হয়েছে সন্ধীপূজা। এদিন সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ‘কুমারী পূজা’।

    কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবীজ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা। মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে গত রোববার শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ২ অক্টোবর দুর্গোৎসব শেষ হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বানারীপাড়া পৌরসভা ও ৮ টি ইউনিয়নে ৫৯ টি পূজা মন্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

    এ বছরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য বানারীপাড়া উপজেলায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পূজা মন্ডপগুলোতে আনসার, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি পূজা-মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। বিপ্লবী কুমুদ বিহারি গুহ ঠাকুরতা প্রতিষ্ঠিত বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় সার্বজনীন মন্দির ও বানারীপাড়া বাজার কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দিরে পূজা-মন্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।

    এ বছর দেবী দুর্গার গজে (হাতি) আগমন এবং দোলায় (পালকি) গমন হবে। গজে দেবীর আগমনকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়, যা শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরার প্রতীক। অন্যদিকে, দোলায় গমন মহামারি বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে, যা একটি অশুভ সংকেত। বানারীপাড়া সার্বজনীন মন্দির ও উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ দাস জানান “গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।

    তিনি আরও বলেন প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও পুজার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি বস্ত্র বিতরন করা হবে। জাতি-ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সবাই আননদঘন পরিবেশে পুজা উপভোগ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বানারীপাড়া বাজার কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দিরের সভাপতি উজ্জ্বল কুন্ডু বলেন এ বছর দুর্গাপূজা যথাযথ ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বিঘ্নে পুজা অর্চনা ও অনুষ্ঠান পালনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকা প্রশংসনীয় বলে জানান তিনি।

    বানারীপাড়া হরিসভা মন্দিরে উৎসবমুখর অঞ্জলি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি উজ্জ্বল কুন্ডু, সহ-সভাপতি সঞ্জীব সাহা, কমল কান্তি বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক তারক কর্মকার, বানারীপাড়া লোকনাথ মন্দিরের সভাপতি বিটু লাল দে, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, সহ-সভাপতি গোবিন্দ সাহা, হরিসভা মন্দিরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দেবনাথ, সাংগঠনিক সম্পাদক সজল সাহা, কোষাধক্ষ তাপস কর্মকার, সহকারী কোষাধক্ষ রিপন কর্মকার, দপ্তর সম্পাদক হৃদয় সাহা,

    লোকনাথ মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ বড়াল, যুগ্ম সম্পাদক কার্তিক বনিক, হরিসভা মন্দিরের সহ-দপ্তর সম্পাদক সুব্রত কর্মকার, সমাজসেবা সম্পাদক প্রশান্ত ভৌমিক ,সাংস্কৃতিক সম্পাদক গৌতম সাহা রনি,কার্যনির্বাহী সদস্য পলাশ সাহা, যুগল দেবনাথ কৃষ্ণ দেবনাথ, চন্দন সাহা, জয় কুন্ডু প্রমুখ।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২০০ ছুঁইছুঁই

    দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ফের চোখ রাঙাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫৭ জন।...