বরগুনার তালতলীতে তিন বছরের এক শিশু ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগে তার মায়ের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ উঠেছে, শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর তার বাবা একাধিকবার মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ।
শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অংকুজান পাড়া আশ্রয় প্রকল্পে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আশ্রয়ন প্রকল্পের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চার বছর আগে উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অংকুজান পাড়া এলাকার শানু হাওলাদারের ছেলে শাহিনের সঙ্গে ছোটবগী ইউনিয়নের পি. কে এলাকার মনির খন্নারের মেয়ে মারজিয়া আক্তারের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর তাঁদের সাংসারে জন্ম নেয় একমাত্র পুত্র সন্তান শাহাদাত হোসেন। এরপর স্ত্রী মারজিয়া আক্তার পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ায় সংসারে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত। সবশেষে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে মারজিয়া আক্তার তার শিশু ছেলে শাহাদাতকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন।
পর দিন সকালে একই এলাকায় অবস্থিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে ভেসে ওঠে শিশু শাহাদাতের মরাদেহ। এরপর মায়ের বিরুদ্ধে শিশু ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগ এনে শিশুটির বাবা শাহিন থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি থানা পুলিশ।
পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, সেই সঙ্গে শিশু ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগে তার মায়ের বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেছেন তাঁরা। এদিকে, মারজিয়া আক্তার নিখোঁজ থাকায় তার বাবা মনির খন্নার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শিশুটির বাবা শাহিন বলেন, ‘সোমবার রাতে মারজিয়া সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি।
খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন নদীতে ভেসে ওঠা লাশ দেখে বুঝতে পারি এটা আমার ছেলে শাহাদাত।’ তিনি আরও বলেন, ‘মারজিয়া দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে ঘর থেকে বের হয়ে যেত। এবার ঘর থেকে বেরিয়ে সন্তানকে হত্যা করে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছে।
আমি থানায় মামলা করতে গিয়েও কোনো পদক্ষেপ পাইনি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’ তালতলী থানার উপ-পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘মারজিয়ার বাবা ঘটনাস্থলে থাকেন না। তবুও মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় তিনি সাধারন ডায়েরি করেছেন।
তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিখোঁজ মারজিয়ার অবস্থান নিশ্চিত হবার চেষ্টা চলছে।’ তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘শিশুর লাশটি পায়রা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।’ ওসি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুটির মা নিখোঁজ থাকার বিষয়টি নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে’