স্টাফ রিপোর্টার: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মেজবাহ উদ্দিনের অপসারণের দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার দুপুরে স্থানীয় সাধারণ জনগণের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন সামাজিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ডা. মেজবাহ উদ্দিন একজন “দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্ট দোসর”, যিনি অনৈতিকভাবে ও অবৈধ প্রক্রিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পদে যোগদান করেছেন।
তারা আরও বলেন, “গত তিন বছর ধরে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি চালিয়ে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা।”বক্তাদের দাবি, ২০২৪ সালের তথাকথিত ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের’ অবৈধ নির্বাচনে তৎকালীন এমপি এস.এম. শাহজাদার সঙ্গে গোপন বৈঠক করে রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে তিনি পদোন্নতি পান এবং ইউএইচএফপিও পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
মানববন্ধন থেকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে তিন দফা দাবি জানানো হয়—
১️. ডা: মেজবাহ উদ্দিনকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
২️. গত তিন বছরে তার দায়িত্বকালীন সকল বরাদ্দ ও ব্যয় সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।
৩️. হাসপাতালের সকল বরাদ্দ ও ব্যয়ের বিস্তারিত বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন,“যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই দাবি বাস্তবায়ন না হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মো. খালেদুর রহমান বলেন,“আমি মাত্র ছয় মাস হলো দায়িত্বে এসেছি। এরই মধ্যে কিছু অনিয়ম পেয়েছি, যা সংশোধনের চেষ্টা করছি। আমি নিয়মিত তদারকি করছি, যাতে হাসপাতালে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম না হয়।”
তিনি আরও বলেন,“ডা. মেজবাহ উদ্দিনের আগের সময়ের ঘটনা সম্পর্কে আমি বিস্তারিত জানি না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করেছি।”
বরিশাল বিভাগের স্বাস্থ্য উপ-পরিচালক ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বদলি তোমাদের হাতে না এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করেন । যদি কোন কোন অনিয়ম থাকে আমরা সেটা খতিয়ে দেখবো। কোন দুর্নীতি আমার আইনে নাই ।যেকোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা কথা বলি ।
উল্লেখ্য, গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। তবে এবার সাধারণ মানুষ সরাসরি রাজধানীতে গিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করায় বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। এখন দেখার বিষয়—স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেয়।