More

    টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকায় বরিশাল এগিয়ে, মহানগরী কিছুটা পিছিয়ে

    অবশ্যই পরুন

    সারাদেশের মত বরিশালেও আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ২৭ লাখ শিশুকে টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলমান। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলে টিকা প্রদানের অগ্রগতি ছিল ৯৭.৭২ ভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক জানান, নির্ধারিত সময়ে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

    গত ১২ অক্টোবর থেকে ১৮ কর্মদিবসে বরিশালের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বরিশাল মহানগরীতেও প্রায় এক লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া হবে, জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার।

    উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম-বীর প্রতিক বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বরিশালের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলায় ২৭ লাখ শিশুর মধ্যে ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৫৪৯ শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হয়েছে।

    সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বরিশাল জেলায় টিকা প্রদানের হার লক্ষ্যমাত্রার শতভাগেরও বেশি। তবে বরিশাল মহানগরীর হার ৯৪.৮২%, যা আগের দিনের ৯৫.৩৯%-এর তুলনায় সামান্য কম। বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছব, ইনশাআল্লাহ।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তা সংস্থার সমর্থনে সরকার প্রথমবারের মতো টাইফয়েড কনজুগেট টিকা সংগ্রহ করে শিশুদের বিনামূল্যে প্রদান করছে। বাংলাদেশে ব্যবহৃত এই টিকা কোনো প্রাণীজ উৎস থেকে সংগৃহীত নয় এবং এতে কোনো নেশাজাত পদার্থ নেই, ফলে সম্পূর্ণ হালাল।

    ইতোপূর্বে সারা দেশের মতো বরিশালেও কন্যাশিশুদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকা প্রদান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, বিনামূল্যে টিকা প্রদানের ফলে বিপুল সংখ্যক কন্যাশিশু ভবিষ্যতে জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে সুরক্ষিত থাকবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণীর সব শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘টাইফয়েড জ¦র’ প্রতিরোধী টিকা প্রদান করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে সমবয়সী শিশুরাও ইপিআই কেন্দ্রে টিকা গ্রহণ করতে পারছে। জন্ম নিবন্ধন সনদের ১৭ সংখ্যা ব্যবহার করে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে যে কোনো শিশু বিনামূল্যে টিকা গ্রহণ করতে পারবে।

    ‘দ্যা গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ’ অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েড জ¦রে আক্রান্ত হয়ে ৮ হাজার জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্ত ও মৃতদের ৬৮% শিশু এবং তাদের অধিকাংশই ১৫ বছরের নিচে। টাইফয়েড জ¦র মূলত দুষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।

    WHO-এর ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং অন্তত ১ লাখ ১০ হাজার জন মারা যায়। আক্রান্ত ও মৃতদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে। পাকিস্তান ২০১৯ সাল থেকেই নিয়মিত টিকাদানে টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকা ব্যবহার করছে এবং প্রাথমিক প্রচারণার হার ছিল ৯৫%।

    স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, টাইফয়েডের মতো প্রাণঘাতি রোগ থেকে শিশু ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করার একমাত্র বিকল্প হলো এক ডোজ টিকা গ্রহণ।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    ৩৭ কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

    যাবজ্জীবন বা ৩০ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা রেয়াতসহ ২০ বছর বা তার বেশি সাজা ভোগ করেছেন, এমন ৩৭...