এবারের নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট প্রয়োগ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও দিক নির্ধারণী নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দীর্ঘ সতের বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের পর অর্জিত ভোটাধিকার জনগণ এবার স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারবেন।
আজ বৃহস্পতিবার নিজ নির্বাচনী আসন কক্সবাজারে এক পথসভায় বক্তব্যকালে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছি, সংগ্রাম করেছি। ইনশাআল্লাহ, এবার দেশের মানুষ মুক্ত পরিবেশে ভোট দেবে এবং একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বস্বীকৃত নির্বাচন হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
বিএনপির এই নেতা জানান, বিএনপি ইতোমধ্যে ২০২৩ সালেই রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য- দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, সমৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা।
সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষি কার্ড দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে কৃষকরা সহজ শর্তে কৃষিঋণ ও ন্যায্যমূল্যে সব ধরনের কৃষি উপকরণ পাবেন। স্বাস্থ্য কার্ড চালু করা হবে, যাতে প্রতিটি নাগরিক প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে থাকেন। ফ্যামিলি কার্ড প্রদান করে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়মিত সরবরাহ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ৫০ লাখ থেকে এক কোটি পরিবারকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, এভাবেই ধীরে ধীরে দেশের দারিদ্র্য হ্রাস করে একটি দ্রারিদ্রতাবিহীন সমাজ গড়ে তোলা হবে।
বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত ‘খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি বিএনপির প্রধান অঙ্গীকার। তিনি বলেন, ক্ষমতায় গেলে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এক কোটি যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
পথসভায় তিনি পেকুয়া–মহেশখালীর লবণ শিল্পের সমস্যার কথাও তুলে ধরেন। আমদানির অনুমোদনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি স্থানীয় লবণচাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি জানান, এই ‘অন্যায্য আমদানি’ বন্ধে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন।
তিনি আরও বলেন, কুতুবদিয়া–মহেশখালী এলাকায় নির্মীয়মাণ বন্দর প্রকল্পটি বিএনপি সরকারের পরিকল্পনার অংশ ছিল। মগনামা ঘাটেই এর জরিপ কাজ শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই এই বন্দর পুরোপুরি চালু করার লক্ষ্য রয়েছে। পথসভায় উপস্থিত সাধারণ জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি শুধু প্রতিশ্রুতি দেয় না, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেও দেখায়।
এরপর তিনি মগনামার পূর্বকূল রঙ্গীনখালে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৮ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
পথসভায় সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাহাদুর শাহ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন, যুবদলের আহ্বায়ক কামরান জাদিদ মুকুট, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এহসান উল্লাহ, কৃষকদলের আহ্বায়ক আবু সিদ্দিক রনিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
