More

    ঝালকাঠির বাসন্ডা ব্রিজ জোড়াতালির ভরসায় দাঁড়িয়ে, যেকোনো সময় ধসের আশঙ্কা

    অবশ্যই পরুন

    বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা নদীর উপর অবস্থিত বাসন্ডা বেইলি সেতু দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ১৯৮৯ সালে নির্মিত এই সেতু প্রায় ৩৯৪ ফুট দীর্ঘ এবং ২৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট, যা মাত্র ৭ টন ওজন বহনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এর উপর দিয়ে ৩-৪ গুণ বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল করছে, যা সেতুর অবনতির অন্যতম কারণ।গত ৯ বছর ধরে এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত করা হয়েছে, এবং হাজারো জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হলেও যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

    স্থানীয়রা জানান, সেতুটি আশির দশকে নির্মিত হয়েছে এবং ৩৪ বছর ধরে এর উপর দিয়ে হাজারো যানবাহন চলাচল করছে।বর্তমানে সেতুর প্লেটে ৬০০টিরও বেশি জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে, নাট-বল্টু খুলে যাচ্ছে এবং উপরের অংশ প্রতিদিন ফাটল ধরছে। ভারী যানবাহন চললে সেতু ভূমিকম্পের মতো কাঁপে, যা চালক ও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। রাতে সেতুর মাঝখানে কোনো আলো না থাকায় পথচারীদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।সেতু ধসে পড়লে ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, যা অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হবে।

    সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুসারে, সেতুটিকে ৭ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত করা হয়েছে, কিন্তু মেরামতের নামে প্রতি বছর তিনবার জোড়াতালি দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই মেরামতগুলো টেন্ডার ছাড়াই করা হয় এবং বিভাগের কিছু কর্মকর্তা এতে লাভবান হন, যার কারণে সেতুটিকে ‘সড়ক বিভাগের ডিম পাড়া হাঁস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে এই জোড়াতালি সেতুর ঝুঁকি কমায় না; কয়েকদিন পরই আবার অচল হয়ে পড়ে।

    নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ৪ লেনের আরসিসি (কংক্রিট) সেতু হবে। ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হাসান জানিয়েছেন, সেতুর ডিজাইন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) বাস্তবায়িত হলে কাজ শুরু হবে । এটি ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের অংশ, এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল বলেন, প্রকল্পের অনুমোদন পেলে নির্মাণ শুরু হবে।

    স্থানীয় চালক মো. রহমত বলেন, “প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে যাওয়া মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার মতো। সরকারের উচিত দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ করা।” ঝালকাঠিতে মোট ৩৮টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, যা অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করে।সরকারী সূত্রগুলো আশ্বাস দিলেও, কাজ শুরু না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। এই সেতু না থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    আগৈলঝাড়ায় ভূমিকম্পে ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ, পিলার ও মেঝেতে ফাটল

    আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্থ...