জীবনরক্ষাকারী র্যাবিশ ভ্যাকসিন না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সরকারি হাসপাতালগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে এই ভ্যাকসিনের সরবরাহ না থাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।বরিশাল সদর হাসপাতালে ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আহত রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে ভ্যাকসিন না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা রোগীদের বাইরে থেকে উচ্চমূল্যে ভ্যাকসিন কিনে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগী এক রোগীর স্বজন বলেন, “আমার শিশুকে কুকুরে কামড় দিয়েছে। হাসপাতালে এসে শুনি ভ্যাকসিন নেই। বাইরে কিনতে বলেছে, কিন্তু দাম অনেক বেশি। এখন কী করবো বুঝতে পারছি না।”
চিকিৎসকদের মতে, র্যাবিশ একটি মারাত্মক ও শতভাগ প্রাণঘাতী রোগ, যার প্রতিরোধে সময়মতো ভ্যাকসিন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাকসিনের সংকট থাকায় জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং দ্রুত ভ্যাকসিন সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এই সংকট কাটবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা জানাতে পারেননি তারা।
এদিকে সচেতন মহল দ্রুত এই সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায় র্যাবিশ সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গিয়ে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। বরিশালের কোন কোন ওষুধের দোকানে এই ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।
নাম না প্রকাশ করার মর্তে কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন-আমরা বাড়তি দামে ওষুধ বিক্রি করছি না। তবে সরবরাহ কম থাকায় হয়তো কেউ কেউ বাড়তি দামে ভ্যাকসিন বিক্রি করতে পারে। এদিকে বরিশাল শহরে কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বরিশালের সিভিল সার্জন মঞ্জুর-ই-এলাহী বলেন, বাংলাদেশের কোথাও ভ্যাকসিন নেই তবে খুব অল্প সময়ের মধ্য ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। বরিশাল সদর হাসপাতালে প্রতিদিন কুকুর এবং বিড়ালে কামড়ানো প্রায় শতাধিক রোগি আসে চিকিৎসা নিতে।
কিন্তু ভ্যাকসিন না পাওয়ায় নিরুপায় হয়ে ফিরে যাচ্ছে রোগীরা। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন-সাড়ে পাঁচশ টাকার ওষুধ ১০০০ থেকে ১২শ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
