বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ৪ জন শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েক যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে ধর্ষণ বিরোধী প্রদীপ মিছিল শেষে বাসায় ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আনিকা সরকার সিথী এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সৈয়দা ফেরদৌস জেবা, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী শুয়াইব ইসলাম স্মরণ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী রাকিব মাহমুদ।
এছাড়া অভিযোগকারীরা হলেন স্থানীয় বাসিন্দা রাহিম মাহমুদ, আবীর, মিলনসহ কয়েকজন। এরা ঝালকাঠি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মাহমুদুল মুনিম।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী প্রদীপ মিছিল চলাকালে এক যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হাসিব আহত হন। এরপর মোটরসাইকেল আরোহী ও তার সাথে থাকা একজনকে ক্যাম্পাসের দায়িত্বরত পুলিশ আটক করে। প্রদীপ মিছিল শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে এলে ক্যাম্পাস ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে সেতুর উপর গেলে আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টায় ওই যুবকরা তাদের জোরপূর্বক রূপাতলী নিয়ে আটকে রাখে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে ছেলে শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং মেয়ে শিক্ষার্থীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তারা।
শিক্ষার্থী আনিকা সরকার সিথী তাদের থেকে লুকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক গ্রুপে তাদের আটকে রাখার বিষয়ে পোস্ট দিলে মাহমুদুল হাসান তমাল, সজল, হাসিব, সাওনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের সাথে যুবকদের বাগবিতণ্ডা চলতে থাকে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দলে দলে রূপাতলী আসতে থাকলে মোটরবাইক ফেলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। এ সময় একজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মাহমুদুল মুনিম জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, ঘটনা শোনার সাথে সাথেই থানায় ফোন করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। রাতের আঁধারে নারী শিক্ষার্থীদের সাথে এমন অপ্রীতিকর ঘটনায় ভুক্তভোগীদের নিয়ে প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান তিনি।