বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও চিত্র জিম্মি করে সাত মাস যাবত ধর্ষণ ও তার স্বামীর প্রেরিত ৩৫লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ধর্ষিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে ধর্ষক ও তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম ছরোয়ার তিন সন্তানের জননী ধর্ষিতার (৩৬) দায়ের করা এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের মৃত ছাদেক ভাট্টির ছেলে আনিচুর রহমান ভাট্টি (৪৫) ও একই গ্রামের মৃত নজের আলী হাওলাদারের ছেলে মো. হালিম হাওলাদার (৫৫) চলতি বছরের ২ জানুয়ায়ী রাতে মিথ্যা কথা বলে পুলিশ তাদের ধরতে এসেছে জানিয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে আশ্রয় চায়। এসময় আনিচুর রহমান প্রবাসীর স্ত্রী’র ঘরে প্রবেশ করা মাত্র তার সহযোগী হালিম হাওলাদার বাহির থেকে তাদের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। আশ্রয় গ্রহন করা আনিচুর রহমান রাত সাড়ে এগারোটার দিকে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে পানি খেতে চাইলে ওই গৃহবধূ পানি নিয়ে ঘরের দ্বিতীয় তলায় গেলে তিন সন্তানের জননী, প্রবাসীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আনিচুর রহমান। মান সম্মানের ভয়ে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানিয়ে চুপচাপ থাকে। পরবর্তিতে ধর্ষক আনিচুর রহমান তার ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে রেখেছে জানিয়ে গৃহবধূকে তার কথানুযায়ি না চললে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেসহ ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে টানা সাত মাস যাবত ধর্ষণ করে আসছে। এক পর্যায়ে ধর্ষক আনিচুর রহমান মাছের ঘের করার জন্য ওই গৃহবধূর কাছে তার স্বামীর প্রেরিত টাকা থেকে স্বামী বিদেশ থেকে আসার আগেই ফেরত দেয়ার কথা বলে ৩৫লাখ টাকা ধার নেয়। ওই গৃহবধূর স্বামী বিদেশ থেকে আসার সময় হয়েছে জানিয়ে চলতি বছরের ৩ জুলাই ধর্ষক আনিচুর রহমানের কাছে ধারের টাকা পরিশোধ করার জন্য বললে আনিচ তা পরিশোধে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যার পরে গৃহবধূ রান্না ঘরে যাবার সময়ে ধর্ষক আনিচুর রহমান ও তার সহযোগী হালিম তাকে জাপটে ধরে। এসময় আনিচ তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে গৃহবধূর ডাক চিৎকারে তার ছেলে (১৫) এসে তাকে উদ্ধার করে। এদিকে ধর্ষক আনিচ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গৃহবধূর অশ্লীল ছবি, ভিডিও এবং ভয়েস ম্যাসেজ ২/৩ গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। এমনকি প্রবাসে থাকা তার স্বামীর কাছে তা প্রেরণ করে। ওই অশ্লীল ভিডিও, ছবি ও ভয়েস ম্যাসেজ গৃহবধূর বাবার পরিবারসহ বিভিন্ন লোকজন দেখতে পায়। অবশেষে স্বজনদের সাথে আলোচনা করে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে মঙ্গলবার ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে ধর্ষক আনিচুর রহমান ও তার সহযোগী হালিম হাওলাদারের বিরুদ্ধে আগৈলঝাড়ায় থানায় মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-১০ (১৭.১১.২০)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফোরকান জানান, ধর্ষিতা গৃহবধূকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য মঙ্গলবারই বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।