বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ক্যাথলিক চার্জের ভূয়া সভাপতি সেজে সরকারী অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের জন্য ৬৯টি গীর্জায় সাড়ে ১৫ লাখ টাকা সরকার বরাদ্ধ করে। ওই অর্থ ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গীর্জা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের হাতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হাশেম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মোঃ লিটন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসাইন, বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাসসহ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দদের উপস্থিতেতে অনুদানের চেক তুলে দেয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বুধবার রাজিহারর খ্রীষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) পক্ষে সভাপতি সুশান্ত সরকার শান্ত চেক গ্রহন করে। তবে ওই দিন চার্জের ভুয়া সভাপতি সেজে অনুদানের জন্য আবেদন করা সাবেক সভাপতি বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক মার্শেল হালদার চেক গ্রহন করে নাই। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসাইনের সাথে যোগাযোগ গত বৃহস্পতিবার ৭ জানুয়ারী চেক গ্রহন করে টাকা উত্তোলন করেন।
রাজিহার খ্রীষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) কোষাধক্ষ্য রবিন সরকার জানান, ১৫ নভেম্বর ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হয় সুশান্ত সরকার শান্ত। সভাপতি হওয়ার পর খ্রিষ্ট ধর্মাবলাম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের জন্য সরকারী অনুদান পাওয়ার জন্য অবেদন করেন তিনি।ওই টাকা পাওয়ার পর রাজিহার খ্রীষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের ব্যায় করা হয়েছে। অন্যদিকে চার্জের সাবেক সভাপতি বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক মার্শেল হালদার কমিটি হওয়ার আগে কারো সাথে আলোচনা না করেই ৯ নভেম্বর ভুয়া সভাপতি সেজে বরিশাল জেলা প্রশাসকের বরাবর অনুদানের জন্য আবেদন করে। এব্যাপারে রাজিহার খ্রীষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) সভাপতি সুশান্ত সরকার শান্ত বলেন, সরকার আমাদের ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকা অনুদান দিয়েছে তা দিয়ে আমরা রাজিহার খ্রীষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) খ্রিষ্ট ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন করা হয়েছে। সাবেক সভাপতি বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক মার্শেল হালদার বৃহস্পতিবার ৭ জানুয়ারী চেক গ্রহন করে টাকা তুলেছে তা আমাদের কমিটির কারোই জানা ছিলোনা। জানার পরে মার্শেল সমাজের কাছে টাকা হস্তান্তর করবে বলে জানান।
ক্যাথলিক চার্জের ফাদার ডেভিড ঘড়ামি জানান, রাজিহার খ্রীষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) কমিটি ১৮ সেপ্টেম্বর বিলুপ্ত করে ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে সাত সদস্য কমিটি গঠন করা হয় ওই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে সুশান্ত সরকার শান্ত। এছাড়া যদি মার্শেল হালদার সভাপতি সেজে সরকারী টাকা তুলে থাকে তাহলে প্রশাসন আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করতে পারে। প্রমান হলে আমরা তার বিরুদ্ধে চার্জের বিধিমোতাবেক ব্যাবস্থা গ্রহন করব।
এব্যাপারে মার্শেল হালদার জানান, আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় আবেদন করে ছিলাম সেই অনুদানের টাকার চেক পেয়েছি সেই টাকা আমি বৃহস্পতিবার ৭ জানুয়ারী উত্তোলন করে আমার কাছে রেখেছি তা কমিটির কাছে দেওয়া হবে এবং সভাপতির সাথে লিখিত ভাবে মিমাংসা হয়েছে কমিটির উপস্থিতিতে সমাজের কাছে টাকা হস্তান্তর করা হবে। ২০২০ইং সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কমিটি বিলুপ্ত হয় এবং ১৫ নভেম্বর ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হলে আপনি ৯ নভেম্বর কিভাবে সভাপতি হলেন এর কোন উত্তর দেননি তিনি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসাইন জানান. ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রত্যায়ন দিয়েছে সেই মোতাবেক আমরা টাকা বরাদ্ধ করেছি। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হাশেম জানান, এরকম কোন ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
এসআগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ এম শামীম
আগৈলঝাড়া, বরিশাল।