More

    নাজিরপুরে বিজয় দিবসকে ‘রাজনৈতিকভাবে কলুষিত’ করার অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধেঃ অপসারণের দাবিতে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

    অবশ্যই পরুন

    পিরোজপুরের নাজিরপুরে মহান বিজয় দিবসকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিতর্কিত ও রাজনৈতিকভাবে কলুষিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজিয়া শাহনাজ তমা সরাসরি পতিত আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করছেন বলে অভিযোগ করেছে নাজিরপুর উপজেলা বিএনপি।

    অবিলম্বে তাকে অপসারণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হাসান খান।

    লিখিত বক্তব্যের শুরুতে বিএনপির এই নেতা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও দ্রুতই বিজয় দিবসের কর্মসূচি ঘিরে উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। লিখিত বক্তব্যে আবু হাসান খান বলেন, ৫৫তম মহান বিজয় দিবসে নাজিরপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ছিল না কোনো শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, ক্রীড়া বা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানো থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিরত থাকা হয়েছে, যা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ১৬ ডিসেম্বর নাজিরপুর মিনি স্টেডিয়ামে আয়োজিত কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজিয়া শাহনাজ তমা এবং অনুষ্ঠানের উপস্থাপক সঞ্জীব রায় দুজনেই ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছাত্র-জনতাকে স্মরণ না করে ইতিহাসকে পরিকল্পিতভাবে উপেক্ষা করেছেন।

    একই সঙ্গে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ বাদ দিয়ে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’-এর কথা বলে প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে চরমভাবে অপমান করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া পতিত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দোসর ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিরোধী ব্যক্তিদের বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মানিত করা হয়। এর প্রতিবাদে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অনুষ্ঠানটি বর্জন করতে বাধ্য হয়।

    সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, যাদের বিশেষ অতিথি করা হয়েছে তারা ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট উপজেলা পরিষদের সামনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে গণঅভ্যুত্থান বিরোধী মিছিল করেছে এবং ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে তারা জড়িত ছিল। এসব ঘটনায় গায়েবি মামলায় নিরীহ মানুষকে জেলহাজতে পাঠানো হয়,যার প্রমাণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রয়েছে।

    এসময় উপজেলা বিএনপির নেতারা বলেন, চলতি বছরের ৯ জুলাই ইউএনও সাজিয়া শাহনাজ তমা নাজিরপুরে যোগদানের পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের দোসরদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার দায়িত্বকালে উপজেলায় কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়নি বরং প্রশাসনিক স্থবিরতা চরমে পৌঁছেছে। সাধারণ মানুষ সেবা নিতে গেলে দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছে। যা নিয়ে আমাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, নাজিরপুর উপজেলায় যদি এইভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা অব্যাহত থাকে, তাহলে পিরোজপুর-১ আসনের আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হওয়া গুরুতরভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

    গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা রক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে ইউএনও সাজিয়া শাহনাজ তমাকে অপসারণের দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, ইয়াহিয়া খান, আসাদুজ্জামান টিপু হাজরা, কলারদোনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল, উপজেলা বিএনপির সদস্য মাসুম মিনা, উপজেলা মহিলা দলের সাবেক সভাপতি বেগম রোকেয়া রহমান, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার সিকদার, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এইচ এম শামিম হাসান এবং সদস্য সচিব তারেক আব্দুল্লাহ বাপ্পিসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    মারা গেলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি

    সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর)...