কুষ্টিয়া ও পটুয়াখালীতে দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার হয়েছে। এরমধ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নিখোঁজ থাকার পর লাশ উদ্ধার হওয়ায় গৃহবধূর স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, পটুখালীতে গৃহবধূ কীটনাশক পান করলেও স্বামী ও ননদ মিলে তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, জেলার কুমারখালীতে আবর্জনার স্তূপ থেকে রেশমা খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মধ্যে হোগলাপাড়া গ্রামে বাড়ির পাশ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রেশমার স্বামী সুমনকে আটক করেছে পুলিশ।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত রেশমা খাতুন কুমারখালীর তেবাড়িয়া গ্রামের রেফাজের মেয়ে ও অভিযুক্ত রেশমার স্বামী সুমন একই উপজেলার হোগলাপাড়া গ্রামের ওহাবের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, এক বছর আগে রেশমার সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়। নরসুন্দর সুমন মাদকাসক্ত থাকায় বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে সুমন ও রেশমার মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর থেকেই রেশমা নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার সকালে বাড়ির পাশের আবর্জনার মধ্যে থেকে দুর্গন্ধ বের হলে এলাকাবাসী আবর্জনা সরিয়ে সেখানে রেশমার লাশ দেখতে পায়। এরপর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, নিহতের স্বামী সুমনকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে হত্যার সঠিক কারণ জানা যাবে।
পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, জেলার বাউফলে মোসাম্মৎ মাসুমা বেগম (২৬) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের শ্বশুরবাড়ির পক্ষের দাবি, স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন তিনি ।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিলবিলাস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তার স্বামীর নাম জামাল হোসেন। তিনি ছানিয়া (৮) ও নুসরাত (২) নামে দুই সন্তানেন জননী ছিলেন।
তবে মৃতের বাবার বাড়ির পক্ষের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাকে আত্মহননে বাধ্য করা হয়েছে অভিযোগ করে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বড় মেয়ে ছানিয়াকে লেখাপড়া করানোকে কেন্দ্র করে স্বামী জামালের সঙ্গে স্ত্রী মাসুমা বেগমের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় মতের অমিল হওয়ায় স্ত্রীকে বেদম মারধর করেন জামাল। প্রায়ই স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওই মারধরের ঘটনা নিয়ে পরদিন আজ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ননদ খাদিজার সঙ্গেও ঝগড়াঝাটি হয় মাসুমার। পড়শিরা জানান, ননদ খাদিজা গায়ে পড়ে ওই ঘটনা তুলে তার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে ভাবিকে খোঁটা দিতে থাকে। এতে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে ভাবিকে প্রচুর গালমন্দ করে খাদিজা। স্থানীয়রা জানান, প্রায়ই খাদিজা তার ভাবির সঙ্গে এমন আচরণ করে মাসুমার জীবন বিষিয়ে তুলেছিল। বারেবারে এমন ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী ও ননদের সঙ্গে অভিমান করে ঘরের পেছনে গিয়ে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময়ে ওই বাড়ির বাবুলের স্ত্রী ডলি আক্তার এ অবস্থায় তাকে দেখে চিৎকার শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাউফল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বিষয় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে।