হঠাৎ গাড়িটি লাফ দিয়ে রাস্তার নিচে পড়ে যায়। কি হলো বুঝতে পারলাম না। মনে হলো আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আল্লাহকে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু হয়ে গেল। এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া আনোয়ারা বেগম এভাবেই দুর্ঘটনার ভয়াবহতার বর্ণনা দেন। বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তার শিশুপুত্র সাজ্জাদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর তার খুব মাথা ঘোরা হলো। কিছুক্ষণ পর ঘটনার ভয়াবহতা দেখে হতবাক হয়ে শিশুটিকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি প্রবল বেগে চলছিল। এর পরেই পদ্মসেতু।
এমনই আলোচনা করছিলেন যাত্রীরা। হঠাৎ গাড়িটি রাস্তা থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে যায়। সেই সময়, তিনি কেবল তার সন্তানকে ধরে ছিলেন।
আনোয়ারা বেগম বলেন, বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে সকাল ৬টায় গাড়িতে উঠি। ঢাকার ধানমন্ডিতে বড় বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনার সময় তিনি অজ্ঞান ছিলেন বলে মনে হচ্ছে। গাড়ি থেকে কে বের করছে মনে নেই! এটি এখনও স্বপ্নের মতো মনে হয়।
আনোয়ারা বেগমের শিশুপুত্র সাজ্জাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আমি আমার মায়ের কোলে ছিলাম।
বাগেরহাটের মোল্লারহাটের গৃহবধূ আনোয়ারা বেগম মোল্লারহাটের গড়ফা গ্রামের তাহিম মোল্লার স্ত্রী। সকালে শিশুপুত্র সাজ্জাদকে নিয়ে বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। দুর্ঘটনায় 18 জন মারা গেছে এবং 30 জনের মতো গুরুতর আহত হয়েছে। তবে, তিনি তার শিশু পুত্রের সাথে সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছেন। পুরো ঘটনায় হতবাক। সে বারবার আল্লাহকে ডাকছে আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছে। তিনি জানান, খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ি ফিরবেন।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল ৮টার দিকে শিবচর এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় ইমাদ পরিবহনের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই 14 জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে মারা যান আরও ৪ জন। নিহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে। দুর্ঘটনার পর হাইওয়ে পুলিশ, শিবচর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দল উদ্ধার কাজ শুরু করে।