বরিশালের আগৈলঝাড়ার হাফছা আক্তার এসএসসিতে জিপিএ—৫ পেলেও দিনমজুর পরিবার হওয়ায় ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভালো কলেজে ভর্তি ও পড়া—লেখার খরচের চিন্তায় পিতা ও মা তাদের চোখমুখে এখন হতাশার ছাপ। জানা গেছে, উপজেলার সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে হাফছা আক্তার ২০২২—২৩ শিক্ষাবর্ষে এসএসসিতে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ—৫ পেয়েছে। হাফছা আক্তারের পিতা মো. আলামিন সরদার তিনি পেশায় একজন দরিদ্র কৃষক। তিনি অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে সংসার চালান। অভাবের এই সংসারে কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে হাফছা আক্তার।
উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের অশোকসেন গ্রামের দিনমজুর ও ৩ সন্তানের পিতা মো. আলামিন সরদারের বড় মেয়ে হাফছা আক্তার। তার ছোট দুই ভাই—বোনও লেখা— পড়া করছে। তার মা পারভীন বেগম একজন গৃহিণী। হাফছা আক্তার জানায়, নিজে অন্যের বাড়িতে প্রাইভেট পড়িয়ে সেই আয়ের টাকায় লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন এবং পরিবারকেও সহযোগীতা করেছেন। পড়ালেখায় প্রয়োজনীয় টাকা তার দিনমজুর পিতার এশার পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব ছিলো না। অর্থের অভাবে বর্তমানে তার ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ভবিৎষতে হাফছা আক্তার লেখাপড়া করে ডাক্তার হয়ে দেশের সেবা করতে চায়। হাফছার পিতা মো. আলামিন সরদার জানান, অভাব—অনটনের মধ্যেও মেয়ে অন্যের বাড়িতে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের লেখাপড়ার টাকা জুগিয়েছে। এমনকি আমাদের সংসারেও টাকা দিয়ে সে সহযোগীতা করতো। সে আরও ভালো ভাবে পড়াশুনা করতে চায়। ৫ জনের সংসারে কৃষি কাজ করে সেই আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে তার বাবার। হাফছার মা পারভীন বেগম জানান, মেয়ের কলেজে পড়ালেখার খরচ কোথায় পাব। কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল হক জানান, হাফছা আক্তার একজন মেধাবী ছাত্রী।
গরীব পরিবারের সন্তান হয়েও ভালো রেজাল্ট করে এখন অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পরেছে তার। সে নিজে অন্যের বাড়িতে প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার অর্থ জুগিয়েছেন এবং পরিবারকে সহযোগীতা করেছেন। আমরা তার সাফল্য কামনা করছি।