More

    বরিশালে রাতের আঁধারে কির্তনখোলা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

    অবশ্যই পরুন

    স্টাফ রিপোর্টারঃ বরিশাল নগরী লাগোয়া কির্তনখোলা নদীতে রাতের আঁধারে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। দিনের বেলায় ড্রেজারগুলো নদীর প্রান্তে ভেড়ানো থাকলেও রাত হলেই শুরু হয় বালু উত্তোলন। তবে বিষয়টি ওপেন-সিক্রেট হলেও প্রশাসনের ভূমিকা লক্ষ্যণীয় নয় বলে দাবি স্থানীয়দের। এদিকে অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনের কবলে পড়েছে নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা।

    এলাকাবাসীর অভিযোগ, বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের চরমোনাইর গীলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন কির্তনখোলা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধ ড্রেজারে মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে ওই চক্রটি। এর নেতৃত্বে রয়েছেন পলাশপুরের বাসিন্দা ফিরোজ ও কালু। এরা দীর্ঘদিন যাবত বালুর ব্যবসা করে আসছেন বলে জানা গেছে। তারা প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত এই বালু উত্তোলন করে। এতে নদীভাঙনের কবলে পড়েছে শহরের পলাশপুরসহ চর আবদানি, চরমোনাই, তালতলী, লামছড়ি গ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ। এতে করে বেশি হুমকিতে রয়েছেন সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও নদী রক্ষা বাধ। ভাঙনের কবলে বসতভিটা হারিয়েছে এ সব গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার।

    শুক্রবার রাত ২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের চরমোনাইর গীলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন কির্তনখোলা নদীতে অবৈধ ড্রেজারে মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে কয়েকটি বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। সেখানে গিয়ে দেখা হয় ড্রেজার চালক রাকিবের সঙ্গে। তিনি বলেন- ভাই আমরা শ্রমিক। আমাদের দিয়ে ফিরোজ ও কালু ভাই বালু উত্তোলন করাচ্ছে। আমরা জানি নদী দিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। আপনারা তাদের সাথে কথা বলেন।

    বাল্কহেড চালক পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন- আমাকে মালিক পাঠিয়েছে। আমি পরের চাকরি করি। ফিরোজ ও কালু ভাই বাল্কহেড ভাড়া নিয়ে বালু উত্তোলন করছে।

    তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে ছুটে আসেন বালু উত্তোলনকারী ফিরোজ ও কালু। এসেই নিজেদের ক্ষমতাধর ব্যাক্তি দাবি করে বলেন- আমরা বেশ কয়েকজন মিলে এ বালু উত্তোলন করছি। আমাদের সাথে প্রভাবশালী নেতারাও রয়েছে। আপনারা ভাই-ব্রাদার, আপনাদের সাথে কাল কথা বলবো।

    স্থানীয় বাসিন্দা শহীদ মিয়া বলেন, প্রায়শই ফিরোজ ও কালুর নেতৃত্বে কির্তনখোলা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধ ড্রেজারে মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। এদের পিছনে বড় বড় রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মদদ রয়েছে। বালু উত্তোলন করে তারা লাখ লাখ টাকা মেরে দিচ্ছে, আর আমরা ভাঙ্গনের সম্মুখিন হয়ে বসতভিটা হারাচ্ছি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

    স্থানীয় আরেক বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ওই চক্রটি খুব বেপরোয়া। তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। তারা নাকি প্রশাসনের লোকদের ম্যানেজ করে রেখেছে। প্রতি মাসে এর ভাগ প্রশাসন নিয়ে থাকে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি বলেন- সাবেক মেয়রের আমলে এখান থেকে অনেকবার বালু উত্তোলন করতে গিয়ে কয়েকটি ড্রেজার আটক হয়েছে। তারপর অনেকদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। বর্তমান মেয়র ক্ষমতায় আসার পর পরই পূনরায় তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।

    বরিশাল নৌ সদর থানার ইনচার্জ আবদুল জলিল ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। বরিশাল নৌ সদর থানার এসআই স্বরুপ বলেন, বিষয়টি আমরা আবগত হয়েছি। আমরা রাতের বেলা টহল দেই। কিন্তু আমরা গেলে কেউ থাকেনা। বিষয়টি নিয়ে ওসি স্যারের সাথে কথা বললে ভালো হয়।

    এ বিষয়ে কাউনিয়া থানার (ওসি তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন- বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখতেছি।

    এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’’

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বিএম কলেজে ছাত্রশিবিরের স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া

    বরিশাল বিএম কলেজে ছাত্র শিবিরের উদ্যােগে ২ দিন ব্যাপি স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পে ব্যাপক সাড়া দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিনেই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী...