বরিশালে জালিয়াতির মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কল্যাণ ভাতার কার্ড তৈরির দায়ে এক ব্যক্তিকে দুটি ধারায় চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার বরিশালের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মেহেদি আল মাসুদ এই রায় দেন বলে বেঞ্চ সহকারী আবুল বাশার জানিয়েছেন।
দণ্ডিত বঙ্গেঁশ্বর ভদ্র গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ছত্রকান্দা গ্রামের বরেন্দ্র নাথ ভদ্রের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী আবুল বাশার বলেন, ২০১৮ সালের ২১ জুন বঙ্গেঁশ্বর ভদ্র সোনালী ব্যাংকের বরিশালের কর্পোরেট শাখায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের একটি কল্যাণ ভাতার কার্ড জমা দেন।
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তার কার্ডটি নিয়ে সন্দেহ হয়। তিনি যাচাই-বাছাই করে দেখতে পান ইতিমধ্যে কল্যাণ ভাতার কার্ডটি সোনালী ব্যাংকের পটুয়াখালীর মৌকরণ শাখায় জমা দেয়া হয়েছে।
বঙ্গেঁশ্বর ভদ্রের জমা দেওয়া কার্ডে বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের সহকারী পরিচালক উৎপালেন্দু দেবনাথের স্বাক্ষর ছিল। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যাংকে এসে জানান কার্ডে দেওয়া স্বাক্ষর ও সিল তার নয়। জালিয়াতির মাধ্যমে কার্ডটি তৈরি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
পরে জালিয়াতির মাধ্যমে কার্ড তৈরির অভিযোগে বঙ্গেঁশ্বর ভদ্রকে কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় বঙ্গেঁশ্বর ভদ্রকে আসামি করে সোনালী ব্যাংকের বরিশাল কর্পোরেট শাখার অ্যাসিটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম সরদার বাদী হয়ে মামলা করেন।
পরে ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি বরিশাল দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক রনজিৎ কুমার কর্মকার অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য প্রতারণার মাধ্যমে জাল-জালিয়াতি করে মূল্যবান কাগজপত্র তৈরি করে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগে বঙ্গেঁশ্বর ভদ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
বিচারে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার বঙ্গেঁশ্বর ভদ্রকে দুই ধারায় চার বছর করে মোট আট বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক। দুই ধারার দণ্ড একই সাথে কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি পাঁচ হাজার করে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস করে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানান আদালতের বেঞ্চ সহকারী।