চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষে আহত তিন শিক্ষার্থী বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় নগরের দুই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে একজনকে বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম। জানা গেছে, সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত হন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের মামুন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম।
এর মধ্যে ইমতিয়াজ আহমেদ নগরের পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন। নাইমুল ইসলাম ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আর মামুন ভর্তি আছেন পার্কভিউ হাসপাতালে। আজ রোববার রাত ৯টার দিকে সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নাইমুল ইসলামকে প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তাঁর ভাস্কুলার ইনজুরি (রক্তনালিতে আঘাত) রয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে তাঁকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
ইমতিয়াজ আহমেদ পার্কভিউর আইসিইউতে ভর্তি আছেন। একই হাসপাতালে ভর্তি মামুনের অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে। পার্কভিউ হাসপাতালে ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে এসেছিলেন সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল আশিক। আইসিইউর বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ইমতিয়াজকে ছয় ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে বলেছেন। তাঁর মাথায় কোপানো হয়।
এতে মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তার্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তার্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমছবি সায়েমের ফেসবুক থেকে নেওয়া গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত। দুই দফা সংঘর্ষে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও অন্তত ১৮০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ ঘটনায় তাঁদের পক্ষের আহত হয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন। সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়।
সেখান থেকে গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের পাঠানো হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহত শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ মাথা, হাত ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অন্তত ৭৭ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছেন। রাত নয়টা পর্যন্ত ১৬ জন ভর্তি ছিলেন বিভিন্ন ওয়ার্ডে। জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় জানায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৭ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৩ জন ও হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।