চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধি : ভোলার চরফ্যাসনের পৌর সদরে জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া দলিল দিয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের ৩ কোটি টাকা মূল্যের ৩৬ শতাংশ জমি জবর দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী সেকান্দার আলীর তিন ছেলের বিরুদ্ধে।
গতকাল রোববার সকালে চরফ্যাসন প্রেসক্লাব বরাবরে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু সুশেন চন্দ্র শীল ও তার পরিবারের সদস্যরা।
জানাযায়,পৌর সদরের আদর্শপাড়া বিআরডিবি এলাকায় সংখ্যালঘু পরিবারের জমি জবর দখল করে নেন সেকান্দার আলীর ছেলেরা। এনিয়ে বিপত্তি শুরু হয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য সুশেন চন্দ্র শীল বাদি হয়ে সেকান্দার আলীর ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে ২০২২সনে চরফ্যাসন সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞার আদেশে কিছুদিন থেমে গেলেও ফের সক্রিয় হয়ে উঠেন জবরদখলকারীরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পটপরিবর্তনের সঙ্গে জবর দখলকারী চক্র নিজের প্রভাবের বলয়ে ওই জমিতে সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করেন। সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা জবরদখলকৃত জমি ফিরে পেতে প্রভাবশালীদের ধারে ধারে ঘুরে ও কোন সুরাহ মেলেনি।জবরদখলকারীদের অব্যহত হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা।
ভূক্তভোগী সুশেন চন্দ্র শীল জানান, চরফ্যাসন পৌর সদরে জিন্নাগড় মৌজায় এসএ ৬০৭ নম্বর খতিয়ানের ৩৮৬০, ৩৮৬৬,৩৮৬৭,৩৮৬৮ দাগে ৫ একর ৭২ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন তার দাদা নকুল চন্দ্র শীল। তার মৃত্যর পরে ওই জমির ওয়ারিশ হিসেবে তার বাবা যোগেশ চন্দ্র শীল ও চাচা বাসুদেব চন্দ্র শীলসহ অপরাপর ওয়ারিশরা মালিক হন। দাদার মৃত্যুর পর তার বাবা নকুল চন্দ্র শীল ১ একর ৬০ শতাংশ জমিতে দাদার ওয়ারিশ হিসেবে রের্কডীয় মালিক হয়ে ভোগদখলে থেকে চাষাবাদ করে আসছিলেন।
পাশাপাশি সড়ক সংলগ্ন স্থানে একটি ছোট টং দোকান নির্মান করে ভোগদখলে ছিলেন।ওই টং দোকানের ভাড়াটিয়া ছিলেন স্থানীয় সেকান্দার আলী চকিদার। সময়ের ব্যবধানে ওই জমির মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে পৌর সভার সাথে সংযুক্ত হয়। এতে আরো দ্বিগুণ হারে জমির দাম রেড়ে যায় । এতে ওই জমি হাতিয়ে নিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেন ভাড়াটিয়া সেকান্দার আলীসহ তাদের দলবলরা।
২০২৪ সনে সেকান্দার আলী চকিদারের মৃত্যুর পর তার ছেলে ইউসুব দুলাল, খোকন ও বাবুলসহ তার ছেলেরা তার বাবা ভাড়াটিয়া সেকান্দার আলী চকিদারের স্ত্রী আনোয়রা বেগমের নামে একটি ভূয়া জাল দলিল তৈরি করে ওই জমির মালিকানাদাবী করে তাদের উচ্ছেদের হুমকি দেন। এনিয়ে বিপত্তি শুরু হলে তিনি স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে ধর্ণা ধরে উল্টো বিপাকে পরেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে অসাধু চক্রের মূলহোতা সেকান্দার আলীর ওয়ারিশরা আতাঁত করে তাদের জাল দলিলের মাধ্যমে তাদের ভোগদখলীয় জমি হাতিয়ে নেন।
সেকান্দার আলীর ছেলে অভিযুক্ত খোকন জানান, আমরা ওই খতিয়ানের মালিক আলী হোসেন ও নজির আহম্মেদের কাছ থেকে ৩৬ শতাংশ জমি খরিদ করে ভোগদখলে আছি।
চরফ্যাসন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, এবিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি । অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।