নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হলেই কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। “সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার জনগোষ্ঠীই গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ” শ্লোগানকে সামনে রেখে গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ কার্যক্রমে সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরন : নাগরিক ভাবনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে কি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত বরিশাল নগরীর বিডিএস মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটির আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচক ছিলেন-সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। সুজনের বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি গাজী জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর কমিটির সভাপতি আব্দুল মোতালেব হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রনজিত দত্ত, সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতাসহ অন্যান্যরা।
গেলটেবিল বৈঠকে বরিশাল জেলা ও মহানগরসহ বিভিন্ন উপজেলার সুজনের নেতৃবৃন্দরা অংশগ্রহন করেন। গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় প্রস্তাব রেখে বলেন-প্রধানমন্ত্রীর হাতে সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত রাখার কর্তৃত্ববাদী ধারার অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ্গ-আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে।
এজন্য ক্ষমতার বিভাজন করতে হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতার চর্চা চালু করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যেন সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত না হয় সেজন্য আইনী বিধান সৃষ্টি করতে হবে এবং প্রকৃত অর্থেই মন্ত্রী পরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল ও অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়া অন্য যে কোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যগণ যেন নিজ দলের সমালোচনা করতে বা বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন, এমন বিধান প্রবর্তন করতে হবে।
পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির যেমন, সরকারি হিসাব সম্পর্কিত কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কমিটি, পাবলিক এস্টিমেট কমিটি, সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কমিটি ইত্যাদির সভাপতির পদ বিরোধী দলকে দিতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তনে প্রস্তাব দিয়ে বক্তারা বলেন-কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসানসহ একটি গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে রাজনৈতিক দলের সংস্কৃতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
রাজনৈতিক দলের সকল স্তরের নেতৃত্ব দলের সদস্যদের গোপন ভোটে নির্বাচিত করা; চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দলের সদস্য হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা; দলের সকল আর্থিক লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেল বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করা; দলের আয়-ব্যয়ের অডিটেড হিসাব প্রকাশ করা ও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার বিধান করতে হবে। সর্বপরি বক্তারা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর সারাদেশ থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে তেমন কোন সফলতা না আসায় এবং পুলিশ আজো অনেকটা নিস্কিয় থাকায় সুষ্ঠু ভোট না হওয়ার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেন।
